• বন্য শুয়োরের উৎপাত, নষ্ট হচ্ছে বিঘার পর বিঘা ফসল, অতিষ্ঠ জগৎবল্লভপুরের চাষিরা
    বর্তমান | ২৭ জানুয়ারি ২০২৫
  • সুদীপ্ত কুণ্ডু, হাওড়া: ফসল চাষ করলেই রাতের অন্ধকারে হানা দিচ্ছে শুয়োরের দল। নষ্ট হচ্ছে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল। গত কয়েক বছরে জগৎবল্লভপুরের বড়গাছিয়া-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামে শুয়োরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন চাষিরা। বাধ্য হয়ে চাষিদের অনেকেই চাষবাস ছেড়ে শ্রমিকের কাজে যুক্ত হচ্ছেন।


    জগৎবল্লভপুরের বড়গাছিয়া-২ পঞ্চায়েতের বোহারিয়া, সন্তোষপুর, হাঁটাল, মানসিংহপুর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে আগে হাজারেরও বেশি বিঘে জমিতে বছরে তিন ফসলের চাষ হতো। জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগে বেশ কয়েকটি দম্পতি গ্রামের একপ্রান্তে বসবাস শুরু করে। তারা মূলত শুয়োর প্রতিপালন করত। এই শুয়োর প্রতিপালকদের মধ্যে দুই দম্পতি নিজেদের শুয়োরগুলোকে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে যায়। তারপরেই বংশবিস্তার করে গত তিন বছরে গ্রামগুলোতে এখন বন্য শুয়োরের সংখ্যা প্রচুর হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ, শুয়োরের উৎপাতে বর্তমানে প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে আর কোনও ফসল চাষ হয় না। ফসল পাকার সময় হলেই জঙ্গল থেকে শুয়োরের দল রাতের অন্ধকারে চাষের মাঠে ঢুকে পড়ে। বন্য শুয়োররা ফসল খাওয়ার থেকেও বেশি নষ্ট করে ফেলছে। স্থানীয় চাষি মদন দিন্দা বলেন, "রবি ফসল চাষ করে কোনও লাভ নেই। যে ফসল উৎপাদন করবো, তার বেশিরভাগই বন্য শুয়োর নষ্ট করে দিচ্ছে।" আরেক চাষি অরবিন্দ মান্না বলেন, "যেদিন মাঠের ধান তুলবো বলে ঠিক করলাম, তার আগের রাতেই প্রায় ৫ কাঠা জমি তছনছ হয়ে গিয়েছে।"


    ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের একাংশ বলেন, শুধু ধান নয়, শুয়োরের উৎপাতে আলু, ওল, কচু সহ কোনও সবজি চাষ করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে অনেকেই কম ফসল ফলাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার চাষের কাজ ছেড়ে কলকারখানার কাজে ঢুকছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা কৃষি দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, "আমরা চাষিদের কিছু বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছি। ফসল বাঁচাতে তাঁরা যেন জমি ঘিরে রাখেন। রাতে পাহারা দেওয়ার কথাও বলা হচ্ছে।" হাওড়া জেলা বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, "এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও ধরনের অভিযোগ আসেনি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে। তবে বনে ছেড়ে দেওয়া গৃহপালিত শুয়োর ধরা বনদপ্তরের আওতায় পড়ে না।"
  • Link to this news (বর্তমান)