অভিজিৎ চৌধুরী, চুঁচুড়া: হুগলি জেলার একাধিক পুরসভা এলাকার রাস্তা বেহাল। বাঁশবেড়িয়া থেকে চন্দননগর, চুঁচুড়া থেকে কোন্নগর, পথে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ভুগছেন বাসিন্দারা। অভিযোগ, বাড়ি বাড়ি জলপ্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার অজুহাতে রাস্তা সারাইয়ের ব্যবস্থা স্থানীয় পুরসভাগুলি করছে না। আবার, জলপ্রকল্পের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাও জলের পাইপ লাইন বসানোর কাজ নিয়মিত করছে। কিন্তু কোনও রাস্তা খুঁড়ে দেওয়া হলে তার যথাযথ সংস্কার করছে না। বাসিন্দাদের অভিযোগ গত চারবছর ধরে ওই সমস্যা চলছে। দীর্ঘবছর ধরে রাস্তা খারাপ থাকার জেরে তা আরও খারাপ হয়েছে। অথচ পুরকর্তারা নির্বিকার।
হুগলির কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, রাস্তার সমস্যা তৈরি হয়েছে তা সত্য। জলপ্রকল্পের কাজের জন্যই সমস্যা বেড়েছে সেটাও সত্য। কিন্তু একটি স্থায়ী উন্নয়নের চলছে। বাসিন্দাদের আমি কথা দিয়েছি, আগামী দু’মাসের মধ্যে রাস্তা সারিয়ে ফেলা হবে। হুগলির চুঁচুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অমিত রায় অবশ্য বলেন, আমি বারবার রাস্তা সঠিকভাবে সংস্কার না করা নিয়ে জলপ্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার বিরুদ্ধে সরব হয়েছি। তাতে কিছুটা কাজ হয়েছে। কিন্তু সমস্যা এখনও আছে। বাড়িতে বাড়িতে জলের সংযোগ দিতে গিয়ে নিয়মিত ছোট-বড় রাস্তা খুঁড়তে হচ্ছে। প্রতিদিন পুরসভার তহবিল থেকে সেই রাস্তার কাজ করা কঠিন। আমরা স্থায়ীভাবে শহরের রাস্তা গড়ে দেব। কিন্তু একটু সময় লাগবে। চন্দননগর পুরসভার মেয়র রাম চক্রবর্তীও সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তাঁরও দাবি, কিছুটা সময় দিতেই হবে। নইলে পুরসভার অর্থ অপচয় হবে। হুগলির জলপ্রকল্প রূপায়ণের কাজ করছে কেএমডিএ। সেই সংস্থার অন্যতম কর্তা তথা উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব বলেন, উত্তরপাড়া শহরেও রাস্তা খুঁড়ে দেওয়া নিয়ে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু জলপ্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। কেএমডিএয়ের জলপ্রকল্পের কর্মীদের প্রাথমিক সংস্কার কাজ ভালোভাবে করার কথা বলা হয়েছে। হুগলি জেলা প্রশাসনও এনিয়ে তদ্বির করেছে। আশা করছি, দ্রুত স্থায়ীভাবে রাস্তার সমস্যা মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।
২০১৯ সাল থেকে হুগলির একাধিক পুরসভা এলাকায় বাড়ি বাড়ি জলপ্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তার জেরেই রাস্তা খুঁড়ে জলের পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। সেই উন্নয়নের কাজের জেরে রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে পড়েছে। অভিযোগ, খুঁড়ে দেওয়া রাস্তা সঠিকভাবে সংস্কার করা হয় না। আবার একবারে কাজ করা হবে বলে দাবি করে পুরসভার তরফেও সেখানে পদক্ষেপ করা হয় না। ফলে আখেরে ভোগন্তি হচ্ছে মানুষের। ২০২৫ সালে এসেও সেই ভোগান্তির সমাধান হয়নি।