শাস্তির খাঁড়ার বিরুদ্ধে বিবৃতি, জানুয়ারির শেষে বড় আন্দোলন জুনিয়র ডাক্তারদের
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৭ জানুয়ারি ২০২৫
আরজি করের সেমিনার হলে এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে কার্যত রাজ্যের পাশাপাশি গোটা দেশ জুড়ে গর্জে উঠেছিলেন চিকিৎসকরা। জুনিয়র ডাক্তাররা বাংলা জুড়ে নজিরবিহীন আন্দোলনে নেমেছিলেন। এমনকী জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ দিনের পর দিন ধরে সরকারি বিরোধী অবস্থানও নিয়েছিলেন। তবে আন্দোলন একটু থিতিয়ে যেতেই এবার পালটা সরকার সেই আন্দোলনকারীদের একাংশের বিরুদ্ধে নানা কৌশলে পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে অভিযোগ। এরপরই এবার এনিয়ে বিবৃতি জারি করলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরসদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘অভয়া আন্দোলনের শুরুর দিকে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে বিচারকরা বলেছিলেন প্রতিবাদীদের উপর সরকার যেন কোনওরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়। ’
‘অথচ আমরা দেখছি একের পর এক আক্রমণ নামিয়ে আনছে প্রশাসন। ’
‘মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিষিদ্ধ রিঙ্গার্স ল্যাক্টেট সরবরাহের দুর্নীতি সামনে আসতেই দৃষ্টি ঘোরাতে কর্তব্যে গাফিলতির কথিত অভিযোগে সাসপেন্ড করা হল ১৩জন সিনিয়র ও জুনিয়র ডাক্তারকে। কোন মেডিক্যাল ক্যাম্পে রোগী দেখেছিলেন জুনিয়র ডাক্তার ফ্রন্টের অন্যতম মুখ ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়া। সংগঠনের প্রচারপত্রে ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়াকে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ এমএস বলে লেখে। নাইয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথনের এফআইআর দাখিল করে তার গ্রামের বাড়িতে ৩০-৪০ জন পুলিশকে দিয়ে প্রেসক্রিপশন প্যাডের খোঁজে লন্ডভন্ড করা হয়। আন্দোলনের আরও একটি মুখ কিঞ্জল নন্দ। সে চলচ্চিত্র অভিনেতাও বটে। অভিনয় করার সময় সে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছুটি নিয়েছিল কি না তা নিয়ে খোঁজ খবর করা শুরু করে মেডিক্যাল কাউন্সিল। ’
‘তারপর আক্রমণ নেমে এল চারজন সরকারি চিকিৎসকের উপর প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন। তারা নাকি কাজে অনুপস্থিত থেকে মেডিক্যাল কাউন্সিলের দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন।’
‘দুর্নীতির আঁতুড় ঘর ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল। মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী নিয়ম বর্হিভূতভাবে ২০১৯ এর পর থেকে পদ আঁকড়ে রয়েছেন। …থ্রেট কালচারের দুই নেতা অভীক দে ও বিরুপাক্ষ বিশ্বাসকে কাউন্সিলের কাজকর্ম থেকে লোক দেখানো সরিয়েছেন। আন্দোলন একটু স্তিমিত হওয়ার পরে আবার ফিরিয়ে এনেছেন দুই মূর্তিকে। আর সন্দীপ ঘোষকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিচারসভা বসিয়েছেন সরকারি কমিটির তদন্তে দোষী সাব্যস্ত অভীক দে কে নিয়ে…’
জুনিয়র ডাক্তারদের ওই সংগঠনের তরফে মুখ্য়মন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়েছে যাতে মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে মানস চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে সরানোর দাবিও তাঁরা তুলেছেন।
তাঁদের দাবি, ‘সমস্যার কারণগুলিকে দূর না করে চিকিৎসকদের উপর শাস্তির খাঁড়া নামিয়ে এনে সুবিধা হবে না। স্বাস্থ্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভয়ার ন্যায় বিচারের দাবিতে চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষের আন্দোলন জারি থাকবে।’
এরপর তারা জানিয়েছে আগামী ২৯শে জানুয়ারি ২০২৫ বেলা ৩টের সময় ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের সামনে বিক্ষোভে শামিল হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।