সোমবার ভোর থেকে টানা এক শিশুর কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। শিশুর টানা কান্নায় ঘুম ভেঙে গিয়েছিল বাড়ির মালিকের। আশেপাশে বাড়ি থেকেও উঁকিঝুঁকি মারা শুরু হয়েছিল। ঘড়িতে তখন ভোর সাড়ে চারটে। শেষ পর্যন্ত ঘুম থেকে উঠে কান্নার আওয়াজ লক্ষ্য করে এগিয়ে যান বাড়ির মালিক। তাঁর বাড়িতেই ভাড়া থাকে একটি পরিবার, সেই পরিবারে দেড় বছরের এক শিশুও রয়েছে। এগিয়ে যেতেই ঘরে বিছানার উপর বসে ওই শিশুকে কাঁদতে দেখেন বাড়ির মালিক ও অন্যরা। বাকিরা? কোথাও কেউ নেই। মায়ের খোঁজ করতে গিয়েই আঁতকে ওঠেন সকলে। পুলিশ সূত্রের খবর, রান্নাঘরে ওই শিশুর মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা। সোমবার ভোরে কোচবিহারের চকচকায় ঘটে গিয়েছে এমনই শিউরে ওঠার মতো ঘটনা।
নিহত মহিলার নাম অর্পিতা সিং (২২)। কোচবিহারের চকচকায় ওই বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন তিনি এবং তাঁর স্বামী রবীন্দ্র আর্য। তাঁদের বছর দেড়েকের এক শিশুসন্তান রয়েছে। মহিলার স্বামী রবীন্দ্র দিনহাটায় একটি চাল কলে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ করেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ১০-১২ দিন অন্তর দিনহাটা থেকে চকচকার বাড়িতে আসতেন তিনি। এ দিনও তিনি কর্মসূত্রে দিনহাটাতেই ছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে এ দিনই চকচকায় ফিরেছেন বলে তাঁর দাবি। যে বাড়িতে তাঁরা ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ির মালিক হীরামোহনচন্দ্র দাস সোমবার সকালে বাচ্চার কান্না শুনে খোঁজ করতে গিয়ে মহিলার দেহ দেখেছেন, তাঁর সঙ্গে আরও অনেকে ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, চকচকায় কাছেই রয়েছে রবীন্দ্রর পারিবারিক বাড়ি। কিন্তু তিনি চকচকার ওই বাড়িতে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে গত ৯ মাস ধরে ভাড়া থাকতেন।সে কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষ্ণগোপাল মিনা জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আপাতত নিহত মহিলার স্বামী এবং আরও কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। নিহতের মা ঊষা সিংহ জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি অসমের হালাকুরা এলাকায়। খবর পেয়ে চকচকায় আসেন তিনিও।