আজকাল ওয়েবডেস্ক: ধারের টাকা মেটাতে অপহরণের ছক কষেছিলেন। পরিকল্পনা মাফিক অপহরণ করেন, বড় অঙ্কের টাকাও হাতান ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে। তবে শেষরক্ষা হল না। পুলিশের জালে পাঁচ অপহরণকারী।
১০ জানুয়ারি, পশ্চিম বর্ধমান জেলার পানাগড়ের বিরুডিহার এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী জয়ন্ত গড়াইকে অপহরণ করা হয়। ৫০ লক্ষ মুক্তিপণ দাবি করেন অপহরণকারীরা। শেষে তা স্থির হয় রফার মাধ্যমে। অপহরণকারীরা ১০ লক্ষ টাকায় রাজি হন ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিতে। ওই ব্যবসায়ীর এক বন্ধু ছ’ লক্ষ টাকা নিয়ে ১৯নম্বর জাতীয় সড়ক পার্শ্ববর্তী বুদবুদ থানা এলাকায় গেলে, ব্যবসায়ীকে কাঁকসা থানা এলাকায় বাঁশকোপা টোল প্লাজার কাছে নামিয়ে অপহরণকারীরা চলে যান বলে অভিযোগ।
গত ১৩ জানুয়ারি জয়ন্ত গড়াই বুদবুদ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর থেকেই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গাড়ির সিম্বল, গাড়ির নম্বর বের করে গাড়ির চালক অভিজিৎ চক্রবর্তীকে প্রথমে আটক করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করেই উঠে আসে বাকি তথ্য। জানা যায়, সুপ্রীয় খাওয়াস, এম টেক পাশ যুবক এই ঘটনার মূল চক্রী। নাম উঠে আসে সোহম নামের এক যুবকের। নিউটাউনসিপ থানা এলাকার টেটিখোলা রাঙামাটি র বাসিন্দা তিনি। দুজনেরই মূল সমস্যা টাকা পয়সা। সঙ্গে বাজারে বিপুল ধার। সব মিলিয়ে বিমলেশ ঠাকুর, সঞ্জীব বিশ্বাস এবং তাঁরা এই পরিকল্পনা করেন।
পাঁচজনে একটি সুইফ্ট ডিজায়ার গাড়ি নিয়ে বুদবুদ থানা এলাকার সোঁয়াই-এর কাছে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেন।।
বুদবুদ থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি ইস্ট অভিষেক গুপ্তা, বুদবুদ থানার ওসি মনোজিৎ ধারা, কাঁকসার এসিপি সুমন কুমার জয়সওয়াল সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। অভিষেক গুপ্তা জানান, ব্যবসায়ী প্রাথমিকভাবে অপহরণকারীদের বিষয়ে তথ্য দিতে পারেননি। বুদবুদ থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত করার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অবশেষে প্রায় ১৩ দিনে অপহরনের ঘটনার কিনারা করে। পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা ছাড়াও, একটি মোটরসাইকেল ও একটি চার চাকা গাড়ি আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চার রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগজিন, একটি ধারালো অস্ত্র, ১লক্ষ ১২হাজার টাকা ও পাঁচটি মোবাইল। সোমবার ধৃত পাঁচ জনকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করে দশ দিনের পুলিশি হেফাজতের নিবেদন জানানো হয়েছে।