• সঞ্জয়ের ফাঁসি চাই না আরজি করে নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের পরিবার
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • আরজি কর মামলায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির বিরোধিতা করল নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের পরিবার। বরং এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীরা অধরা থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের তদন্তের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

    সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে এই ধর্ষণ ও খুনের মামলার শুনানি ছিল। সেখানে এমনই দাবি করেন নির্যাতিতার বাবা মা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখা হয় বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।

    এদিন নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, কন্যাহারা পরিবার চায় না যে দোষীর মৃত্যুদণ্ড হোক। বরং তাঁদের পাল্টা দাবি, এই ঘটনায় ‘প্রকৃত অপরাধী’রা এখনও অধরা। তাদের তদন্তের আওতায় আনা হোক। নিহতের বাবা জানান, যারা অপরাধী, তারা সকলে গ্রেপ্তার হোক, এই তাঁদের দাবি।

    আরজি কর মামলায় এখনও পর্যন্ত একমাত্র দোষী সাব্যস্ত সিভিক পুলিশ সঞ্জয় রায়। তাঁকে আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই মামলাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে একাধারে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। সম্প্রতি এই দুই প্রতিষ্ঠান দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ বাতিল করে ফাঁসির দাবি জানিয়েছে। যা নিয়ে রাজ্য জুড়ে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবার দোষী সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চাই না বলে আদালতে আবেদন জানাতেই বিষয়টির নাটকীয় পট পরিবর্তন ঘটে। যার জেরে রাজ্য সরকার ও সিবিআই-এর পক্ষ থেকে সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছে।

    সোমবার এই মামলার শুনানির সময় রাজ্য সরকার ও সিবিআই-এর সওয়াল-জবাব শুনে বিচারপতি দেবাংশু বসাক রাজ্য সরকারের আইনজীবীর উদ্দেশে প্রশ্ন তুলে বলেন, একই দাবিতে মামলা। তাহলে পৃথকভাবে গ্রহণযোগ্যতার অর্থ কী? আপাতত মামলার এই অংশ অর্থাৎ দুটি পৃথক মামলা গ্রহণ করা হবে কি না, সেই সংক্রান্ত শুনানি শেষ, রায়দান স্থগিত রাখা হয়েছে।

    প্রসঙ্গত সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহঃ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে ছিল আরজিকর মামলার শুনানি। সেই শুনানিতে রাজ্যের মামলা দায়েরের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আদালতে সিবিআই-এর আইনজীবী এস ভি রাজুর দাবি, রাজ্য সরকার নিম্ন আদালতে অর্থাৎ শিয়ালদহ কোর্টে এই মামলার পার্টি ছিল না। সেজন্য উচ্চ আদালতে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তারা মামলা করতে পারে না। এ প্রসঙ্গে পৃথক তিনটি মামলার উদাহরণও দেন সিবিআই-এর ওই আইনজীবী।

    কিন্তু রাজ্যের তরফে পালটা অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত ১৯৭৬, ২০০৩ এবং ২০১০ সালের সুপ্রিম কোর্টের তিনটি নির্দেশনামা দেখিয়ে তাঁদের পক্ষে যুক্তি দেন যে, এই মামলায় রাজ্য সরকারও শাস্তি বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করতে পারে। এদিকে দোষী সঞ্জয়ের হয়ে হাইকোর্টে লড়তে চলেছেন লিগাল এইডের আইনজীবীরা। এর আগে তাঁরা শিয়ালদহ আদালতেও লড়েছিলেন।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)