আবাস যোজনার টাকা পেতে স্বামীকে পাকা বাড়ি থেকে বের করে গোয়ালঘরে পাঠিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু তাতেও লাভ হলো না। ঘটনা জানাজানি হতেই তদন্তের নির্দেশ দেন বিডিও। অগত্যা সেই টাকা ফেরত দিয়ে এলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দা বামাপদ চাকির স্ত্রী রিঙ্কু। ওই মহিলা আবাস সমীক্ষা দলের সদস্য ছিলেন।
দাসপুর থানার ডিহিচেতুয়া গ্রামের বাসিন্দা বামাপদ। গ্রামে তাঁর একতলা সুসজ্জিত পাকা বাড়ি রয়েছে। ছেলে সোনার কারিগর। কিন্তু আবাস যোজনার টাকা পাওয়ার জন্য তিনি ঠাঁই নেন গোয়ালঘরে। ওই পঞ্চায়েত এলাকায় আবাসের সমীক্ষক দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তাঁর স্ত্রী পেশায় আশা কর্মী রিঙ্কু চাকি। বামাপদ-রিঙ্কু কেল্লাফতে করেও ফেলেছিলেন। আবাস প্রাপকদের তালিকায় নাম ওঠে বামাপদরও। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পাঠানো ৬০ হাজার টাকা ঢুকেও গিয়েছিল তাঁর অ্যাকাউন্টে। বাড়ি তৈরির তোড়জোড়ও শুরু করেছিলেন তিনি।
কিন্তু গ্রামবাসীদের মধ্যে ঘটনা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায়। এলাকায় সম্পন্ন পরিবার হিসেবেই পরিচিত বামাপদ। তিনি কী ভাবে আবাস যোজনায় টাকা পেলেন, তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠছিল।
যদিও বামাপদর সাফাই ছিল, স্ত্রী এবং সন্তানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো নয়। তাই তাঁরা পাকা বাড়িতে থাকলেও তিনি গোয়ালঘরেই থাকেন। তা মানতে রাজি হননি গ্রামবাসীরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, ডাহা মিথ্যে বলছেন বামাপদ। গত সপ্তাহে বিষয়টি সামনে আসার পরেই শোরগোল পড়ে যায়।
খবর পৌঁছয় দাসপুর-১ নম্বর ব্লকের বিডিও দীপঙ্কর বিশ্বাসের কাছে। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) তিনি ‘এই সময় অনলাইন’-কে জানিয়েছিলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেন তিনি।
বিডিও-র নির্দেশে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সাত সকালেই গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিলেন জয়েন্ট বিডিও। তিনি অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পান। আশা কর্মী রিঙ্কু চাকির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এরপরেই সোমবার বিকেলে বিডিও অফিসে গিয়ে আবাসের প্রথম কিস্তিতে পাওয়া ৬০ হাজার টাকা বিডিওকে ফেরত দেন বামাপদ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী রিঙ্কুও। ওই টাকা ট্রেজারিতে ফেরানো হবে বলে জানান বিডিও। ওই টাকা দেওয়া হবে যোগ্য উপভোক্তাকে।