• মায়াপুর ট্যাকের ফেরিঘাটে বাঁশের মাচা দিয়েই যাতায়াত নিত্যযাত্রীদের
    বর্তমান | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: প্রায় তিন বছর আগে জেটির কাজ শেষ হয়ে পড়ে আছে মায়াপুর ট্যাকের ঘাটে। কিন্তু আজ পর্যন্ত মায়াপুর ট্যাকের ফেরিঘাটের সেই জেটি চালু হয়নি। ফলে বিপজ্জনকভাবে প্রতিদিন বাঁশের মাচা দিয়ে পারাপার করতে হয় নিত্যযাত্রী, স্কুল পড়ুয়া থেকে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের। এই ফেরিঘাট হয়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ প্রতিদিন মায়াপুর ও নবদ্বীপের মধ্যে যাতায়াত করেন। বিশেষ করে মায়াপুর, বামুনপুকুর, বল্লালদিঘি থেকে প্রায় দু’হাজার শ্রমজীবী মানুষ কর্মের সন্ধানে নবদ্বীপে যান। এমনকী নদীয়ার গঞ্জডাঙা, শ্রীনাথপুর, ভারুইডাঙা সহ আশপাশ এলাকা থেকে দুধ বিক্রেতারা বড় বড় দুধের ড্রাম নিয়ে নবদ্বীপ বাজারে আসেন। ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই জেটির যাতায়াতের রাস্তাটি এতটাই সংকীর্ণ যে ওই পথ দিয়ে একই সঙ্গে যাতায়াত করতে পারেন না ব্যবসায়ীরা। ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের দাবি অবিলম্বে জেটিতে ওঠা নামার জন্য ভেসেল মাধ্যমে বিকল্প পথ করে দেওয়া হোক। এ ব্যাপারে বারবার জেলা পরিষদ ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জলপথ পরিবহন দপ্তরকে জানানো হয়েছে। মাঝে মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা এসে দেখে যান। যদিও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে বাঁশের মাচা দিয়ে যাতায়াত করতে হয় ফেরি পারাপার করতে আসা মানুষজনকে। এমনকী দীর্ঘদিন পড়ে থাকার ফলে অনেকেই ওই ফেরিঘাটের ঘরের পাশেই জবরদখল করে ব্যবসা করছেন। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।


    মায়াপুর-বামুনপুকুর এক নম্বর পঞ্চায়েত সদস্য তথা নবদ্বীপ ফেরিঘাট জলপথ পরিবহন সমবায় সমিতির সম্পাদক সুশান্ত হালদার বলেন, মায়াপুর ট্যাকের ঘাটের এই জেটিটি প্রায় তিন বছর আগে তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন দপ্তর এই জেটিটি তৈরি করেছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই জেটিটি চালু করা যায়নি। আমরাও চাইছি এত টাকা খরচ করে জেটিটা যখন করা হয়েছে তখন জেটিটি অবিলম্বে চালু করা হোক। নদীর জল বেড়ে বা কমে গেলে বাঁশের মাচা পরিবর্তন করতে হয়। সেজন্য প্রতিমাসে খরচ পড়ে যায় প্রায় ২ লক্ষ টাকা। তিনি বলেন, এই জেটিটি চালু করা যায়নি তার প্রধান কারণ জেটিতে যাতায়াতের রাস্তাটি ওয়ান ওয়ে। 


    এই ফেরিঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ  মায়াপুর ও নবদ্বীপের মধ্যে নৌকা পথে অনেকেই যাতায়াত করেন। মন্দির দর্শনে কেউ মায়াপুর থেকে নবদ্বীপ, কেউবা নবদ্বীপ থেকে মায়াপুর যান। দোল পূর্ণিমা, ঝুলন পূর্ণিমা, রাস যাত্রা, জন্মাষ্টমী  উৎসবের দিনগুলিতে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয় নবদ্বীপ ও মায়াপুরে। এক্ষেত্রে পরিবহনের মূল মাধ্যম নবদ্বীপ থেকে মায়াপুরে লঞ্চ ও নৌকা চলাচল। বিপদজনকভাবে বাঁশের মাচা দিয়ে স্কুটি ,মোটরসাইকেল পারাপার করা হচ্ছে। 


    নবদ্বীপ ষষ্ঠীতলার বাসিন্দা  শিক্ষক সুরজিৎ সাহা বলেন, বাঁশের মাচা দিয়ে বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ এবং ছোট ছোট ছাত্র ছাত্রীদের খুব অসুবিধা হয়।  


    নবম শ্রেণীর ছাত্রী ইশা মিস্ত্রি জানায় প্রতিদিনই আমরা মায়াপুর থেকে নবদ্বীপের স্কুলে পড়াশোনা করতে যাই। বাঁশের মাচা দিয়ে আমাদের সাইকেল নিয়ে নৌকায় উঠতে হয়।


    উল্লেখ্য, প্রায় তিন বছর আগেই এখানে জেটি তৈরি হয়েছিল।পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন দপ্তর মায়াপুরের এই ফেরিঘাটে জেটিটি  তৈরি করেছিল। কিন্তু সেটি পড়েই আছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)