জেলায় ২ পদ্মশ্রী, সঙ্গীতশিল্পী অরিজিৎ সিংকে নিয়ে আবেগে ভাসছে জিয়াগঞ্জ
বর্তমান | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
অভিষেক পাল, বহরমপুর: ঘরের ছেলে অনেক আগেই ছুঁয়েছেন সাফল্যের শিখর। দেশ ছাড়িয়ে গোটা বিশ্ব তাঁর সুরের মূর্ছনায় মোহিত। তিনি অরিজিৎ সিং। একের পর এক সম্মান ও পুরস্কার তাঁকে কিছুতেই শিকড়ের টান ভোলাতে পারেনি। বারবার ফিরে আসেন মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে। নিজের বাড়ি ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেন খ্যাতির খুশি। এবার কলা বিভাগে অরিজিতের পদ্মশ্রী সম্মান পাওয়ার খবরে উদ্বেলিত জিয়াগঞ্জ তথা গোটা মুর্শিদাবাদ জেলা। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিনই এই খবর প্রচার হতেই তাঁর বন্ধু-বান্ধব প্রতিবেশী সবার মধ্যেই আনন্দের জোয়ার। সঙ্গীত অনুষ্ঠানে এখন জেলার বাইরে অরিজিৎ। তাঁর ঘরে ফেরার অপেক্ষায় গোটা জিয়াগঞ্জ। এই সম্মান নিয়ে অরিজিৎ কী বলেন, সেদিকেই তাকিয়ে প্রিয়জন থেকে শুরুকরে ভক্তকূল। এদিন অবশ্য ছেলের সম্মান প্রাপ্তি নিয়ে বাবা-কাকারা কেউই সংবাদ মাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। তাঁদের সাফ কথা, ‘আগে অরিজিৎ প্রতিক্রিয়া দিক। তারপরই আমরা যা বলার বলব।’
জিয়াগঞ্জ রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যামন্দিরের ছাত্র ছিলেন অরিজিৎ। সেখানকার পরিচালন সমিতিতেও এখন যুক্ত হয়েছেন তিনি। তাঁর এই সম্মান পাওয়ার খবরে খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। শিক্ষিকা সুমিতা লাহিড়ি বলেন, ‘ওঁর পদ্মশ্রী সম্মান পাওয়াটা আমাদের কাছে খুব আনন্দের। ও আমার ছাত্র, আমাদের স্কুলের ছাত্র। আমাদের জেলার ছেলে। জিয়াগঞ্জের ছেলে বলে আজ আমাদের বেশি গর্ব। ওর অনেক গুণ। যেগুলি এখনও লুকিয়ে রেখেছেন। নিজেকে ভাঙা গড়ার মধ্য দিয়ে সবসময় অরিজিৎ শিখতে চান। মানুষের মন-মন্দিরে চিরকাল অরিজিৎ স্থান করে থাকন, এটাই আমার ও আমাদের চাওয়া। ও ফিরলে অবশ্যই দেখা করব। হয়তো দেখব, ও নিজেই বিদ্যালয়ে চলে এসেছে। মাঝেমধ্যেই ও নিজের স্কুলে আসে।’
জিয়াগঞ্জের যে গানের স্কুল থেকে অরিজিতের হাতেখড়ি সেখানকার শিক্ষিকা আলপনা হাজারি বলেন, ‘আমার স্বামী ও ভাসুরের কাছে অরিজিৎ ছোটবেলা থেকে গান শিখেছে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুলগীতি ও আধুনিক সঙ্গীত রীতিমতো চর্চা করতো। আজ যোগ্য বলেই ওকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করেছে সরকার। আমরা সকলেই খুব খুশি।’
অপরদিকে, আধ্যাত্মিকতা বিভাগে বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের স্বামী প্রদীপ্তানন্দ ওরফে কার্তিক মহারাজকে পদ্মশ্রী সম্মান দিচ্ছে কেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘আমি সন্ন্যাসী। আজ এই সম্মান আমার কাছে খ্যাতির বিড়ম্বনা। ভারত সরকার এই সম্মান দিয়েছে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমার ধর্ম, সংস্কৃতি ও সভ্যতা রক্ষার জন্য আমি সনাতনী ভাইদের একত্রিত করার কাজ করব।’
‘খ্যাতির বিড়ম্বনা’ সামলেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিতে ছাড়েননি কার্তিক মহারাজ। তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদে মুর্শিদাবাদ ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে আমার প্রচারের সুযোগ হয়েছে।’