• আসানসোলে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা
    বর্তমান | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: আসানসোলের বড় ফার্নিচার ব্যবসায়ীর বাড়িতে সশস্ত্র দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের পিছনে উঠে এল সিওয়ান গ্যাংয়ের হাত। ব্যবসায়ীর বাড়িতে থাকা ৮০ লক্ষ টাকা লুট করাই ছিল তাদেরগ আসল লক্ষ্য। শুধু সিওয়ান গ্যাংয়ের সদস্যরাই নয়, শিল্পাঞ্চলের কুখ্যাত দুষ্কৃতীরাও ছিল ষড়যন্ত্রের পিছনে। পুলিস তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। উঠে এসেছে ব্যবসায়ীর ঘনিষ্ঠ এক কারবারির যোগসূত্রও। ব্যবসায়ীর পারিবারের ঘনিষ্ঠ সেই ব্যক্তিই ডাকাতদের কাছে বাড়িতে টাকা থাকার কথাটি ফাঁস করেছিল। পুলিস সেই ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করেছে। 


    ডিসি ধ্রুব দাস বলেন, আসানসোল ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুষ্কৃতী হানার ঘটনায় আন্তরার্জ্য যোগ পাওয়া গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। 


    শনিবার সকালে ফার্নিচার ব্যবসায়ী সুবীর বাসুর বাড়িতে দুষ্কৃতীরা হানা দেয়। একজন দুষ্কৃতী বাড়ির কেয়ারটেকারের মাথায় পিস্তল ধরেছিল। কেয়ারটেকারের চিৎকার শুনে সুবীরবাবু দোতলা থেকে নামতে গেলে আর এক দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে পিস্তল ধরে। ব্যবসায়ী সর্বশক্তি দিয়ে তাকে ধাক্কা দিলে সে নিয়ন্ত্রণ হারায়। তারপরই এলাকা ছাড়ে দুই দুষ্কৃতী। পুলিস তদন্ত শুরু করে। পুলিস সিসি ক্যামেরার ফুটেজ মিলিয়ে দেখতে পায়, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢোকা দুই দুষ্কৃতী একটি দামী গাড়ি করে আসানসোলের গরাই রোডে নেমেছিল। পুলিস সেই গাড়ির সূত্র ধরে তাবরেজ খানকে গ্রেপ্তার করে। গাড়িটি ছিল তাবরেজের। তাবরেজের গাড়ি থেকে একটি ন‌াইন এমএম পিস্তলও উদ্ধার করে। পুলিসের দীর্ঘ জেরায় সে ভেঙে পড়ে। এরপরই সে জানায়, ব্যবসায়ীর বাড়িতে বিপুল টাকা থাকার কথা জানিয়েছিল কাঠ ব্যবসায়ী সাদ্দাব আহমেদ ওরফে রাজু। তাবরেজের সঙ্গে শিল্পাঞ্চলের দুষ্কৃতীদের ওঠাবসা রয়েছে। সেই খবর দেয় কুখ্যাত দুষ্কৃতী রঘুনাথ কর্মকার ও অখিলেশ সিং। রঘুনাথের বিরুদ্ধে দু’টি খুন ও একটি ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। অখিলেশের বিরুদ্ধেও ধানবাদে দুটি ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। 


    রঘু ও অখিলেশের আসানসোল সংশোধনগারেই পরিচিত হয়। জেল সূত্রেই তাদের পরিচয় হয় সিওয়ানের কুখ্যাত ডাকাতদের। এই অপারেশনে রঘু-অখিলেশই ডাকে তাদের। 


    এরপর তাবরেজের বাড়িতে সবাই মিলে ডাকাতির নকশা করা হয়। সেই মতো ঘটনার দিন সকালে তাবরেজ দুই সিওয়ানের ডাকাতকে নিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়ির একশো মিটার আগে ছেড়ে দেয়। অন্যদিকে, রঘু চোরাই করা বাইক নিয়ে একই কায়দায় আরও দুই সিওয়ানের দুষ্কৃতীকে ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নামিয়ে দেয়। নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি, বাইক নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু অপারেশন সফল হয়নি। তাই খালি হাতেই ডাকাতদের নিয়ে এলাকা ছাড়ে তারা। পুলিস এখনও পর্যন্ত রাজু, তাবরেজ, রঘু ও অখিলেশকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছে। রবিবার অভিযুক্তদের আসানসোল আদালতে তোলে পুলিস। পুলিসের আর্জির ভিত্তিতে বিচারক অভিযুক্তদের ১০ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)