সংবাদদাতা, মানকর: পানাগড়ে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনার কিনারা করল বুদবুদ থানার পুলিস। ৫ দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, নেশার টাকা জোগাড় করতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছিল তারা। তবে এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত কিনা, পুলিস তা খতিয়ে দেখছে। বিষয়টি নিয়ে রবিবার রাত আটটা নাগাদ বুদবুদ থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা, কাঁকসার এসিপি সুমনকুমার জয়সওয়াল, বুদবুদ থানার ওসি মনোজিৎ ধারা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসের ১০ তারিখে পানাগড় বাইপাস সংলগ্ন এলাকা থেকে কাঁকসার বিরুডিহার বাসিন্দা জয়ন্ত গড়াই নামে ওই পাথর ব্যবসায়ীকে অপহরণ করা হয়। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বুদবুদ থানার সোঁয়াই মোড়ের কাছে একটি হোটেলে তাঁকে আটকে রাখা হয়। অপহরণকারীরা পরিবারের লোকদের কাছে প্রথমে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল। পরে ১০ লক্ষ টাকায় রফা হয়। তবে শেষপর্যন্ত অপহরণকারীদের ৬ লক্ষ টাকা দেয় ব্যবসায়ীর পরিবার। অভিযোগ, টাকা পাওয়ার পরেও ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়। ঘণ্টাখানেক পর হোটেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় ব্যবসায়ীকে। গত ১৩ জানুয়ারি বুদবুদ থানায় ওই ব্যবসায়ী অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস ঘটনার তদন্ত শুরু করে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দিকে বিশেষ তথ্য হাতে না এলেও ধীরে ধীরে তথ্য পেতে থাকে তারা। এলাকার দেড়শোরও বেশি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হয়। অবশেষে পাঁচ দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতরা হল অভিজিৎ চক্রবর্তী, সুপ্রিয় খাওয়াস, সঞ্জীব বিশ্বাস, সোহম চট্টোপাধ্যায় এবং বিমলেশকুমার ঠাকুর। ধৃতরা কাঁকসা এবং দুর্গাপুর নগর নিগম এলাকার বাসিন্দা। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে একজন ইসিএলে কর্মচারী ও দুজন বি-টেক পাস।
ধৃতদের থেকে একটি চারচাকা গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া একটি আগ্নেয়াস্ত্র, ৪ রাউন্ড গুলি, একাধিক মোবাইল, অপহরণে ব্যবহৃত ছুরি এবং নগদ ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অভিষেক গুপ্তা বলেন, ধৃতরা বাকি টাকা কোথায় কোথায় খরচ করেছে, তাদের ব্যবহৃত গাড়িটি ভাড়ার নাকি নিজস্ব, এই সমস্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কিনা তাও দেখা হচ্ছে। সোমবার ধৃত ৫ জনকে দুর্গাপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক টিআই প্যারেডের নির্দেশ দেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তের জন্য ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে।