নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। অর্থদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়া গেলেই দামোদরের উপর শিল্পসেতু তৈরির কাজ শুরু হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্থদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়া সময়ের অপেক্ষামাত্র। টেকনিক্যাল কয়েকটি বিষয় দেখার পরই ছাড়পত্র দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে এসে সেতু তৈরির কাজের শিলান্যাস করতে পারেন। ইডেন ক্যানেলের উপরও আর একটি সেতু হবে। অর্থদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়া গেলে সেই কাজও শুরু হবে। সেতু তৈরির জন্য প্রথমবার টেন্ডারে সাফল্য পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়বার টেন্ডার হওয়ার পর ঠিকাদার সংস্থাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেতু তৈরির জন্য প্রায় ২৪৬ কোটি টাকা দেওয়া হবে বলে রাজ্যের বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছিল। তারপর থেকেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সুমন জানা বলেন, অর্থদপ্তরের অনুমতি নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নথি পাঠানো হয়েছে। দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বড় বাজেটের কাজের জন্য বেশকিছু অনুমতি প্রয়োজন হয়। সেসব প্রক্রিয়া শেষ হলেই কাজ হবে। নতুন সেতু তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের দরকার হবে না। তবে নদীর পাড় যারা জবরদখল করে রয়েছে তাদের সরানো হবে। সম্প্রতি সেচদপ্তর নদের বাঁধে থাকা জবরদখলকারীদের সরানোর জন্য নেটিস জারি করেছে। শুধু রায়না বা খণ্ডঘোষ নয়, জামালপুর, গলসি সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে জবরদখলকারীদের সরানো হবে। প্রায় তিন হাজার জবরদখলকারীকে তারা চিহ্নিত করেছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, কৃষকসেতু ভেঙে ফেলা হবে না। সংস্কার করা হবে। সেটির পাশেই শিল্পসেতু তৈরি করা হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দামোদর নদের উপর সেতু নির্মাণ হলে শুধু পূর্ব বর্ধমান নয়, হুগলি, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন। কৃষক সেতু বেহাল হয়ে যাওয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের নাকাল হতে হচ্ছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাজি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নতুন সেতু তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। তিনি কথা দিলে তা রাখেন। সেটা আবার প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। নতুন সেতু তৈরি খুব দরকার হয়ে পড়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শিল্পসেতু তৈরি হওয়ার পাশাপাশি বর্ধমান-আরামবাগ রোডও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। এই রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। সংকীর্ণ রাস্তা হওয়ার কারণে হামেশাই দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়া মাঝ রাস্তায় কোনও গাড়ি বিকল হয়ে গেলে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দামোদরের উপর আরও একটি নতুন সেতু তৈরির কথা রয়েছে। খড়্গপুর-মোড়গ্রাম জাতীয় সড়ক তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। গলসির কাছে সেই সেতু তৈরি করা হবে। দু’টি সেতু তৈরি হয়ে গেলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত খুলে যাবে বলে জেলার বাসিন্দাদের দাবি।