• বাংলা শস্য বিমায় উপকৃত জেলার ৩৭ হাজার কৃষক
    বর্তমান | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বাংলা শস্য বিমায় ২৪ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেন মুর্শিদাবাদ জেলার চাষিরা। এখনও পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৩৭০ জন চাষির অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে ক্ষতিপূরণের টাকা। গত মরশুমে অতিবৃষ্টি ও বন্যার জলে জেলার ছ’টি ব্লকে চাষের ক্ষতি হয়। ভরতপুর-১, বহরমপুর সদর, বড়ঞা, কান্দি সদর, খড়গ্রাম ও নবগ্রাম ব্লকে ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়। এইসব এলাকার চাষিরা শস্যবিমার আবেদন করেন। মোট ৪০ হাজার ৮০৪জন চাষির ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা রয়েছে। ৮ জানুয়ারি থেকে টাকা ঢুকতে শুরু করেছে। জেলার চাষিরা মোট ২৮ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। 


    বহরমপুর মহকুমার সহ কৃষি অধিকর্তা মিঠুন সাহা বলেন, এবছর বাংলা শস্য বিমায় ভালো আবেদন জমা পড়ে। সেই আবেদন খতিয়ে দেখার পর এবার সরাসরি চাষিদের অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকছে। বহরমপুর ব্লকের চার হাজার ৯২০জন চাষির বিমার আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৪৫১৩ জন চাষি ১কোটি  ৬ লক্ষ টাকা পেয়েছেন।


    প্রসঙ্গত, কোনও প্রাকৃতিক কারণে চাষিদের উৎপাদিত ফসল নষ্ট হলে তাঁরা যাতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই বাংলা শস্যবিমা যোজনা চালু করে রাজ্য সরকার। চাষিদের হয়ে বিমার প্রিমিয়ামের টাকা মেটায় রাজ্য। সীমান্তবর্তী এই জেলা থেকে প্রতিবছরই শস্যবিমায় আশানুরূপ আবেদন জমা পড়ে। চাষিদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য বছরে দু’বার নির্দিষ্ট ফর্মে আবেদন করতে হয়। খরিফ মরশুমে ধান চাষে প্রতিবার ভালো আবেদন জমা পড়ে। ফসলের ক্ষতি হলে চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে গ্রাম পঞ্চায়েত ভিত্তিক উপগ্রহ চিত্র খতিয়ে দেখেন ইন্সুরেন্স কোম্পানির কর্মীরা। উপগ্রহ চিত্র ও মাঠ থেকে পাওয়া ছবিকে সামনে রেখেই ঠিক করা হয় ক্ষতিপূরণের পরিমাণ। তারপর চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই সরাসরি পৌঁছে যায় ক্ষতিপূরণের টাকা। 


    পুজোর আগেই অতিবৃষ্টির জেরে মুর্শিদাবাদ জেলার বেশকিছু ব্লকে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকে ধানের ফলনে প্রভাব পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কারণে শস্যবিমার আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়ে দেন। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা অনেকেই শেষের দিকে আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রায় ৪ লক্ষ ৮০ হাজার আবেদন জমা পড়ে। আবেদনকারীর ফর্ম অনলাইন পোর্টালে আপলোড করা হয়। এই বিমার জন্য কোনও প্রিমিয়ামের অর্থ দিতে হয় না বাংলার চাষিদের।


    বহরমপুরের চাষি গিয়াসুদ্দিন মণ্ডল বলেন, গঙ্গার জল প্লাবিত হয়ে জমির ফসল নষ্ট হয়েছিল। চার বিঘা জমির ধান ক্ষতি হওয়ায় শস্যবিমার আবেদন করেছিলাম। কোনও তো টাকা লাগে না। রাজ্য সরকার প্রিমিয়াম দেয়। সেই জন্য আমরা প্রতিবার বিমা করে রাখি। এবার ক্ষতিপূরণের সেই টাকা পেয়েছি।


    আর এক চাষি বলেন, শস্যবিমার জন্য আমাদের কোনও টাকা দিতে হয় না। শুধু ফর্ম পূরণ করলেই হয়ে যায়। এই বিমা আমাদের চাষে নির্ভরতা জুগিয়েছে। প্রকৃতির মার হলেও বিমার টাকা পাওয়ায় নতুন করে চাষ করতে পারব। 
  • Link to this news (বর্তমান)