নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে টনক নড়ল জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের। নেফ্রোলজি বিভাগে চিকিৎসকের পাশাপাশি সিসিইউ’র জন্য পোর্টেবল ডায়ালিসিস মেশিন চেয়ে স্বাস্থ্যভবনে চিঠি দিচ্ছেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ। সোমবার তিনি বলেন, আমাদের এখানে নেফ্রোলজিস্ট না থাকার কারণে ওই প্রসূতিকে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে রেফার করতে হয়েছিল। তাছাড়া উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভেন্টিলেশনে ভর্তি থাকাকালীন ওই রোগীর ডায়ালিসিস প্রয়োজন হয়। কিন্তু ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীকে ডায়ালিসিস দেওয়ার মতো পরিকাঠামো ওখানেও ছিল না। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আবার ঘটতে পারে। সেকথা মাথায় রেখেই যাতে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন কোনও রোগীকে প্রয়োজনে ডায়ালিসিস পরিষেবা দেওয়া যায়, সেজন্য পোর্টেবল মেশিন চেয়ে স্বাস্থ্যভবনে চিঠি লিখছি আমরা। দু-একদিনের মধ্যেই ওই চিঠি পাঠানো হবে।
নেফ্রোলজি বিভাগের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে নিউরোলজি এবং কার্ডিওলজি বিভাগ চালু হয়নি। ফলে বহু রোগীকে রেফার করতে হয়। সেকারণে সপ্তাহে অন্তত একদিনের জন্য হলেও অন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজ থেকে এনে যাতে জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে ওইসব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেওয়া হয়, স্বাস্থ্যভবনকে লেখা চিঠিতে আর্জি রাখা হচ্ছে। সুপার বলেন, আমাদের হাসপাতালে নেফ্রোলজি বিভাগের পাশাপাশি কার্ডিওলজি ও নিউরোলজি বিভাগ চালু হয়নি। সপ্তাহে এক-দু’দিনের জন্য হলেও ওইসব বিভাগে যাতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেওয়া হয়, সেব্যাপারে রাজ্যের কাছে আবেদন জানাচ্ছি আমরা।
২০২২ সালে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ চালু হয়। বর্তমানে সুপার স্পেশালিটি ও জেলা হাসপাতাল মিলিয়ে মেডিক্যাল কলেজ চলছে। কিন্তু একাধিক বিভাগ চালু না হওয়ায় ঠিকমতো পরিষেবা মিলছে না বলে অভিযোগ। কয়েকদিন আগে গ্রিভেন্স রিড্রেসাল সেল জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ঘুরে গিয়েছে। ওই কমিটির সামনেও বিষয়টি উল্লেখ করেন কয়েকজন চিকিৎসক। তাঁদের বক্তব্য ছিল, সুপার স্পেশালিটি বলা হলেও জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিভাগ চালু হয়নি। বিশেষ করে হার্ট ও কিডনির রোগী এলেই তাঁদের রেফার করে দিতে হয়।
এরইমধ্যে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল থেকে রেফার করা সান্ত্বনা রায় নামে এক প্রসূতির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যেই ওই প্রসূতির পরিবার জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে পুলিস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গড়লেও তার রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি। এদিন সুপার বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এখনও আমার হাতে আসেনি। রিপোর্টে যা আসবে স্বাস্থ্যভবনকে জানিয়ে দেওয়া হবে। ফাইল চিত্র।