নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: সোমবার ভোরে কোচবিহারের চকচকায় ঘরের ভিতর থেকে এক বধূর দেহ উদ্ধার হয়। গ্রামে গৃহবধূর রহস্য মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ ওই বাড়ির ভাড়াটিয়ার ঘর থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ আসছিল। শুনতে পেয়ে বাড়িওয়ালার পরিবারের লোকেরা ঘরের সামনে গিয়ে দেখেন খাটের উপর একবছরের শিশুটি কাঁদছে। পাশে রান্নাঘরে বধূর দেহ পড়ে আছে। ভোরেই থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম অর্পিতা সিংহ (২০)। তাঁর বাপেরবাড়ি অসমের ধুবড়ি জেলার হালাকুড়া গ্রামে। বছর তিনেক আগে কোচবিহারের কালিজানির কুড়ারপারের এক যুবকের সঙ্গে অর্পিতার বিয়ে হয়। দম্পতির বছর দেড়েকের শিশুপুত্র রয়েছে। স্বামী দিনহাটায় একটি রাইস মিলে কাজ করেন। চকচকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। ঘটনার পর পুলিস মৃতার স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। ঘরটি পুলিস সিল করে দিয়েছে।
এলাকার লোকজন ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত। বধূর মৃত্যুর খবর পেয়ে হালাকুড়া থেকে আত্মীয়রা চলে আসেন। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল পুলিস তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে। সদ্য মাতৃহারা শিশুটি বর্তমানে তার ঠাকুমার কাছে আছে বলে মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। কিভাবে ওই বধূর মৃত্যু হল? এই ঘটনার সঙ্গে কে বা কারা যুক্ত? তাদের কি উদ্দেশ্য ছিল পুলিস সব দিকই খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে।
পুলিস সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। মৃতার পিসতুতো দাদা রঞ্জন দে বলেন, বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা চকচকায় চলে আসি। কিন্তু কিভাবে এমনটা হল বুঝতেই পারছি না। ওঁর গলায় ক্ষত চিহ্ন রয়েছে বলে শুনেছি। ভাইপো ওর ঠাকুমার কাছে আছে। আমরা চাই, পুলিস এই রহস্য ভেদ করে দোষীদের শাস্তি দিক।
স্থানীয় বাসিন্দা আরতি রায় বলেন, প্রায় বছরখানেক ধরে এই দম্পতি এখানে ভাড়া আছে। বাড়ি থেকে তাঁরা খুব একটা বের হতেন না। কি করে এমনটা হল বুঝতেই পারছি না। পুলিস নিশ্চই তদন্ত করে দোষীর শাস্তির ব্যবস্থা করবে। এদিকে, বাড়ির মালিক হীরামনচন্দ্র দাস বলেন, ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ আমরা শিশুর কান্না শুনতে পাই। অনেকক্ষণ ধরে শিশুটি কাঁদছিল। কিন্তু বাচ্চাটি কাঁদছে সেটা দেখতে গিয়েই দেখি অর্পিতা পড়ে রয়েছে। বাচ্চটি বিছানার উপর ছিল। এরপরেই পুলিসকে খবর দেওয়া হয়। পুলিস এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বছর খানেক ধরে আমাদের বাড়িতে ভাড়া ছিল।