• পাঞ্জিপাড়া কাণ্ড: রক্তের সম্পর্ক ছাড়া বন্দিদের সঙ্গে দেখা করায় নিষেধাজ্ঞা
    বর্তমান | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রায়গঞ্জ: পাঞ্জিপাড়া বন্দি পলায়নকাণ্ডে সরাসরি প্রভাব পড়ল রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারের রুটিনে। আঁটোসাঁটো হল নিরাপত্তাবেষ্টনী। শুধু তাই নয়, কড়াকড়ি এতটাই বাড়ল যে, রক্তের সম্পর্ক ছাড়া সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না কেউ। বাংলাদেশি বন্দিদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম আরও কঠোর। তাঁদের সঙ্গে কাউকেই দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। জারি হয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা।


    রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারের সূত্রের দাবি, অন্তত ১২ থেকে ১৫ জন বন্দি লাগাতার নজরদারিতে রয়েছে। তারা সাজ্জাকের পরিকল্পনার ব্যাপারে আগেভাগেই টের পেয়েছিল। কিন্তু কাউকে তারা বুঝতে দেয়নি। তবে গুলিকাণ্ডের পর সেই সব বিষয় ক্রমশ জানাজানি হয়। তার জন্য সংশোধনাগারের কল রেকর্ডিংও তদন্তকারীরা সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন। 


    সূত্রের খবর, জেলা সংশোধনাগারে ২২ জন বাংলাদেশি বন্দি আছেন। তাঁদের সঙ্গে কাউকেই দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ পাঞ্জিপাড়া বন্দি পলায়ন কাণ্ডে সাজ্জাকের বাংলাদেশি মদতদাতা আব্দুল হোসেনের হদিশ মিলেছে। যার প্রত্যক্ষ মদতে ইসলামপুর আদালত চত্বর বা তার আশপাশের এলাকায় সাজ্জাকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছয়। এমনকী বিহারের কুখ্যাত এক দুষ্কৃতী হাবিবুরের যোগসূত্রও মিলেছে। সে টাকাপয়সা দিয়েছিল সাজ্জাককে। আগ্নেয়াস্ত্র কেনা, পালানোর জন্য বাইক কেনার টাকাও জুগিয়েছিল সে।


    ১৫ জানুয়ারি রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগার থেকে ইসলামপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সাজ্জাক আলম সহ তিনজন বিচারাধীন বন্দিকে। বিচারপর্বের শেষে সেই বন্দিদের রায়গঞ্জে ফিরিয়ে আনার পথে ঘটে যায় অঘটন। পাঞ্জিপাড়ায় পুলিসকে গুলি করে পালায় সাজ্জাক নামে এক বন্দি। যা নিয়ে রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে যায়। তদন্তে নেমে ইসলামপুর জেলা পুলিস জানতে পারে, সংশোধনাগারে বসেই গোটা পরিকল্পনা হয়েছিল। তার সঙ্গ দিয়েছিল সহবন্দি আব্দুল হোসেন ও তার শাগরেদরা। তারপর জল অনেক দূর গড়িয়েছে। পুলিস এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়েছে সেই পলাতক বন্দি সাজ্জাকের। গ্রেপ্তার হয়েছে হজরত, আব্দুল, হাবিবুর নামে তিনজন। উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে, গোটা ঘটনার ছক হয়েছে রায়গঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে বসে। এমনকী পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলার ছলে সন্দেহভাজনদের সঙ্গে কোড ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলেছিল সাজ্জাক। যার তথ্য তদন্তকারীরা পেয়েছেন। সে ব্যাপারে প্রকাশ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছে পুলিস। তারপরই সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কঠোর পন্থা নিয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সন্দেহভাজন বন্দিদের উপর নজরদারি। সেই সঙ্গে বন্দিদের সঙ্গে দেখা করা বা সাক্ষাৎকারে রাশ টানা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)