নাগরাকাটায় মেয়ের বিয়ের এক সপ্তাহ আগে বাড়িতে চুরি, মাথায় হাত বাবার
বর্তমান | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: চলছিল বিয়ের আয়োজন। তার আগেই মেয়ের বাড়ি থেকে সর্বস্ব চুরি হয়ে গেল। নগদ, সোনার অলঙ্কার মিলিয়ে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র চুরির ঘটনায় বিপাকে পড়েছে মেয়ের পরিবার। খাবারের মধ্যে নেশার ওষুধ মিশিয়ে বাড়ির সকলকে ঘুম পাড়িয়ে রবিবার গভীর রাতে এই রহস্য চুরির ঘটনাটি ঘটে নাগরাকাটা ব্লকের সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পাটোয়ারী পাড়ায়। সোমবার সকালে চুরির ঘটনার কথা জানাজানি হতেই গ্রামজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মেয়ের বিয়ের জন্য তিল তিল করে করে জমানো টাকা ও সোনার অলঙ্কার চুরি হয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়ে মেয়ের বাবা- মা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসে নাগরাকাটা থানার পুলিস। এই ঘটনায় আত্মীয়রা কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে তদন্তকারী অফিসারদের প্রাথমিক অনুমান। যদিও নাগরাকাটা থানার আইসি কৌশিক কর্মকার বলেন, পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বাড়ির লোকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পাটোয়ারী পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল সামাদ আলি মেয়ের বিয়ের জন্য প্রায় তিনবছর ধরে টাকা জমিয়েছিলেন। মেয়ে নাসিম পারভীনের বিয়ে স্থির হয় আগামী ২ ফেব্রুয়ারি। ময়নাগুড়ি ব্লকের সাপ্টিবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর সাপ্টিবাড়ির ছেলে। বাড়িতে বিয়ের প্যান্ডেল তৈরি কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বর্ণালঙ্কার বানিয়ে বাড়িতে এনে রেখে দিয়েছিলেন আব্দুল সাহেব। ইসলাম ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ের আগে মিলাদ নামে একটি অনুষ্ঠান করতে হয় বাড়িতে। সেই অনুষ্ঠান ছিল রবিবার। মেয়ের বিয়ের জন্য আত্মীয়স্বজনও আসা শুরু করেন। রবিবার দুপুরের খাবার পর থেকেই পরিবারের সকলের চোখে শুধু ঘুম লাগছিল।
এদিনও দেখা যায় ওই বাড়ির কনে নাসিমের মা রুবি খাতুন, বাবা আব্দুল সামাদ আলি, জেঠু আব্দুল সালাম, বোন খুসবু পারভীন, ভাই জাকির হুসেন, ঠাকুমা আসিয়া খাতুন সহ সকলে ঘুমে ঢলে পড়ছেন। আসিয়া খাতুন তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় সিঁড়ি থেকে পড়ে গেলে তাঁর মাথা ফেটে যায়। রাতে আত্মীয়রা যাওয়ার পর পরিবারে সদস্যরা ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে ঘুম থেকে উঠলেও তন্দ্রা কাটেনি। তারই মধ্যে লক্ষ্য করেন আলমারি খোলা। লকারও খোলা অবস্থায়। নগদ আট লক্ষ টাকা নেই, প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার সোনার অলঙ্কারও গায়েব। তবে পুলিসের অনুমান যেভাবে চুরির ঘটনাটি ঘটেছে তাতে এরসঙ্গে বাইরের কোনও দুষ্কৃতী জড়িত নেই। খুব পরিচিত এবং কাছের মানুষ এই কাণ্ড ঘটাতে পারে বলে তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান। নিজস্ব চিত্র।