সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: সোমবার আলিপুরদুয়ার রেল জংশনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের সময় ‘গো ব্যাক’ ও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান শুনতে হল বিজেপির জেলা সভাপতি এমপি মনোজ টিগ্গাকে। দফায় দফায় এই স্লোগানের জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এদিন এমপির বৈঠকের তাল কাটে। এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে পদ্ম শিবিরকে।
হাসিমারায় অসামরিক বিমানবন্দর ও জংশনে রেলের জমিতে এইমসের ধাঁচে ২০০ শয্যার হাসপাতাল তৈরির দাবিতে গত ২৭ ডিসেম্বর ডিআরএম অফিসে বিক্ষোভ দেখান জংশনের ব্যবসায়ীরা। ডুয়ার্স উন্নয়ন সংগ্রাম সমিতির ব্যানারে ব্যবসায়ীরা এই বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। এই দাবিতে ওই দিন রেল বাজারে ব্যবসা বন্ধেরও ডাক দেওয়া হয়। তারপর এক মাস কেটে গিয়েছে। ওই দুই দাবি নিয়ে কতটা কী হল, তা জানতেই এমপি মনোজ টিগ্গাকে এদিন ব্যবসায়ীরা বৈঠকে ডাকেন। জংশন রেল বাজারের কালীমন্দির চত্বরে এদিন বৈঠক হয়। কিন্তু বৈঠক শুরুর আগেই তাল কাটে। এমপিকে শুনতে হয় ‘গো ব্যাক’ ও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। পরে অবশ্য বৈঠক নির্বিঘ্নেই শেষ হয়।
বৈঠকের পর ডুয়ার্স উন্নয়ন সংগ্রাম সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক তথা রেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তুষাররঞ্জন ঘোষ বলেন, বৈঠক সদর্থক হয়েছে। বছর ঘুরলেই রাজ্য বিধানসভার ভোট। তাই সেই নির্বাচনের আগে চাপ বাড়াতেই আমাদের এই দুই দাবি নিয়ে কতটা কী হল, তা জানতেই এদিন এমপিকে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। এমপি আমাদের জানিয়েছেন, এই দাবিগুলি পূরণের জন্য তিনি আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। আমরা কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
যদিও এমপি মনোজ টিগ্গা বলেন, বৈঠকে কেউ আমার বিরুদ্ধে গো ব্যাক স্লোগান দেননি। তবে ব্যবসায়ীরা নয়। তৃণমূলের লোকজন জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন। এটা তৃণমূলের লোকজনের সংস্কৃতি।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশচিক বরাইক বলেন, আমাদের দলের লোকজন নয়। শুনেছি, এদিন সাধারণ মানুষ বিজেপি এমপিকে গো ব্যাক স্লোগান দিয়েছেন। আসলে মানুষ আর বিজেপির রেল হাসপাতাল ও বিমানবন্দর তৈরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করছেন না। তাই আমজনতা এখন প্রতিশ্রুতির জবাব চাইছে।
মনোজবাবু আরও বলেন, হাসিমারায় বায়ুসেনা বিমানবন্দরে রানওয়ে তো আছে। এখন অসামরিক যাত্রী পরিষেবায় টার্মিনাল তৈরির জন্য ৩৭ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই জমি নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে কথা বলতে হবে। আর জংশনে রেল হাসপাতাল তৈরিতে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তর, স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা চলছে।
জন বারলা কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু দপ্তরের মন্ত্রী থাকার সময় রেলের জমিতে হাসপাতাল তৈরির অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে লোকসভা ভোটের আগে সেই হাসপাতালের শিলান্যাস করতে পারেননি বারলা। বছর ঘুরলেই বিধানসভার ভোট। বলা বাহুল্য তার আগে এই ইস্যুতে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ীদের সাঁড়াশি চাপ বাড়ছে এমপি মনোজ টিগ্গার উপর। জানা গিয়েছে, এই দুই দাবিতে কেন্দ্রের সঙ্গে পরবর্তীতে কী কথা হবে এমপি দ্রুত তা ব্যবসায়ীদের হোয়াটসআপ করে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।