নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ধীরে ধীরে সুন্দরবনকেই যেন তারা নিজেদের দ্বিতীয় ঘর হিসেবে বেছে নিতে শুরু করেছে। রাশিয়া, ইউরেশিয়া বা সাইবেরিয়ার হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডা থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে মনোরম পরিবেশে দিন কাটাতে সুন্দরবনের দ্বীপগুলি তাদের ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা হয়ে উঠেছে। এই জনপদে ক্রমশ বাড়ছে পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যা। গত বছর আট হাজার ৭৭৬টির মতো পাখি গোনা গিয়েছিল। এবার সংখ্যা বেড়েছে। এই শীতে ৩১ হাজার ৯২৬টি পাখি এসেছে। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সমীক্ষার রিপোর্টে এমন তথ্যই উঠে এসেছে। পাখি বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, সুন্দরবন নয়া হলিডে ডেস্টিনেশন হয়ে উঠছে পরিযায়ী পাখিদের।
কোন ধরনের পাখি এবার বেশি দেখা গিয়েছে? রিপোর্ট অনুযায়ী, ১২ বিরল প্রজাতির পাখি দেখা গিয়েছে। যেমন, ইউরেশিয়ান কার্লিউ, লেসার স্যান্ড প্লুভার, কমন রেড শ্যাঙ্ক, সাত ধরনের মাছরাঙা, ব্রাউন ও ব্ল্যাক হেডেড গাল ইত্যাদি। এছাড়াও প্যাসিফিক গোল্ডেন প্লুভার, গ্রেট নট, ব্লু উইঙ্গড পিটা সহ নানা ধরনের পাখির কলরবে মুখর সুন্দরবনের বনজঙ্গল। এবার সবমিলিয়ে এসেছে ১৫৪ প্রজাতির পাখি। জঙ্গলের কোর এলাকা থেকে বাফার জোনে বেশি দেখা গিয়েছে তাদের। টাইগার রিজার্ভ সূত্রে খবর, মাতলা, বসিরহাট, সজনেখালি সহ ছ’টি রেঞ্জ এলাকায় তিনদিন ধরে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তার মধ্যে মাতলা রেঞ্জে সবথেকে বেশি পাখি দেখেছেন পক্ষীপ্রেমীরা।
গতবারের তুলনায় এবার প্রায় ২২ হাজার অতিরিক্ত পাখি সুন্দরবনে উড়ে আসায় উচ্ছ্বসিত সরকারি আধিকারিকরা। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, ‘যেসব দ্বীপে পাখি বেশি দেখা গিয়েছে, সেখানকার পরিবেশ তাদের পক্ষে অনুকূল। আশপাশে বসতি নেই। ফলে তাদের বিরক্ত করার মতো কিছু নেই।’ পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘দ্বীপে পাখিদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। তাই শীতের সময় তারা এখানে নির্দ্বিধায় চলে আসছে। ক্রমে বাড়ছে সংখ্যা।