ঝিমিয়ে পড়া কুমোরটুলি সরস্বতী পুজোর আগে আবার প্রাণচঞ্চল
বর্তমান | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত বছরের তুলনায় এবার কুমোরটুলিতে প্রতিমার বায়না কিছুটা বাড়ল। ২০২৪ সালে ছিল প্রায় দু’হাজার। এবার তা ছাপিয়ে হল দু’হাজার ২০০। বায়নার বাইরেও বিক্রি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ছাঁচের ঠাকুর। বিভিন্ন সাইজের প্রতিমার গড় দাম ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা। এর বাইরেও কম বা বেশি দামের আছে। কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংগঠনের কর্মকর্তা বাবু পাল সোমবার বলেন, ‘বায়নার পরিমাণ বাড়ায় আমরা খুশি। আশা করছি, শেষ মুহূর্তে বিক্রি আরও বাড়বে। সঠিক সময় পুজো উদোক্তাদের হাতে প্রতিমা তুলে দেওয়াই আমাদের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ।’
বনমালী সরকার স্ট্রিট, কুমোরটুলি স্ট্রিট, রবীন্দ্র সরণি সহ পটুয়াপাড়ার সর্বত্র ঘুরে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন মৃৎশিল্পীর ঘরে জোরকদমে চলছে সরস্বতী তৈরির কাজ। কোথাও চলছে শাড়ি পরানো। কোথাও চক্ষুদান হচ্ছে। আবার কোথাও অর্ডারের বাইরে গিয়ে মাঝারি মাপের কাপড় পরানো প্রতিমা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। মৃৎশিল্পী চায়না পালের স্টুডিওতে চার কারিগর জোরকদমে ব্যস্ত সরস্বতী তৈরির কাজে। চায়নাদেবী বলেন, ‘গত বছরের থেকে এবার প্রায় ৩০টি প্রতিমার বরাত বেশি পেয়েছি। তাই কাজের চাপও বেশি। কলকাতা সহ আশপাশের জেলা থেকেও মিলেছে বরাত।’ শিল্পী সমর পাল বলেন, ‘পুজো যতই এগিয়ে আসছে চলছে অনেক রাত পর্যন্ত মূর্তি তৈরি। এখন বড় প্রতিমার শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে। মাঝারি মাপের মূর্তির কাজ শেষ করে তা গোডাউনে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ শেষ।’ শিল্পী রাজা পাল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দু’টি পুজো উদোক্তা প্রতিমা নিয়ে গিয়েছে। জোরকদমে কাজ চলছে। তার ফাঁকে দু-একটি কালী প্রতিমারও বরাত এসেছে। তার কাজও চলছে দ্রুতগতিতে।’
এদিন বনমালী সরকার স্ট্রিটে শিল্পীর ঘরে কয়েকজন পুজো উদোক্তা প্রতিমা তৈরির কাজ কতটা এগিয়েছে, তা দেখতে এসেছিলেন। মানিকতলা মেইন রোডের বাসিন্দা সঞ্জয় পাল নামে পুজো কমিটির এক কর্তা শিল্পীকে বলেন, ‘সরস্বতীর পাশে থাকা বই দু’টি কিন্তু ঠিক মাপের হয়নি।’ চিৎপুর খগেন চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা স্বপন দাস কুমোরটুলি স্ট্রিটের এক শিল্পীকে বলেন, ‘প্রতিমার তুলনায় হাঁস তো ছোট হয়ে গিয়েছে।’ তা নিয়ে নরমে‑গরমে তর্কও হল দু’তরফের। দুর্গাপুজোর পর একপ্রকার ঝিম মেরে ছিল কুমোরটুলি। বাগদেবীর আরাধনা যতই এগিয়ে আসছে, ততই প্রাণচঞ্চলতা ফিরে পাচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত কুমোরপাড়া। নিজস্ব চিত্র