গিলাঁ বারে (জিবি) সিনড্রোম নিয়ে কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে ভর্তি ছিল পশ্চিমবঙ্গের ২ শিশু। এই খবর সামনে আসার পরেই উদ্বেগ বাড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। এ বার রাজ্যবাসীকে গিলাঁ বারে (জিবি) সিনড্রোম নিয়ে আশ্বস্ত করলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।
গত বছর ডিসেম্বরের শেষ থেকে এ পর্যন্ত রাজ্যে নতুন করে অ্যাকিউট ফ্ল্যাসিড প্যারালাইসিস বা জিবি সিনড্রোমের বাড়বাড়ন্ত হয়নি, জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব। শিশুদের মধ্যে হঠাৎ দুর্বলতা অথবা পক্ষাঘাত, দুইয়ের যে কোনও একটির মাধ্যমেই অ্যাকিউট ফ্ল্যাসিড প্যারালাইসিস সিনড্রোম ধরা পড়ে। এর ফলে পেশির শক্তি কমতে শুরু করে। এই রোগ কত দ্রুত ছড়াচ্ছে অথবা কী ভাবে ছড়াচ্ছে, ন্যাশানাল পোলিও সার্ভেলিয়েন্স প্রোজেক্ট (এনপিএসপি)-এর তরফে সেই নজরদারি চলে।
স্বাস্থ্যসচিব জানান, জিবি সিনড্রোম নতুন বা বিরল রোগ নয়। দেশে এবং রাজ্যে এই রোগ বিক্ষিপ্তভাবে আগেও দেখা গিয়েছে। এই রোগের ফলে ‘অ্যাকিউট ফ্ল্যাসিড প্যারালাইসিস’ হতে পারে। ১৫ বছর বয়সিদের মধ্যে পোলিও রোগ সংক্রমণ নিয়ে নজরদারি চলে নিয়মিত। সেই নজরদারির অন্তর্ভুক্ত এই রোগও।
বাংলায় ২ শিশুর শরীরে গিলাঁ বারে সিনড্রোমের থাবা?
উত্তর ২৪ পরগনার বাগুইআটির এক ৮ বছরের শিশু এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা ৭ বছরের এক শিশুর মধ্যে গিলাঁ বারে সিনড্রোম দেখা গিয়েছিল। দুই শিশুই ভর্তি ছিল ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে। এই ঘটনা সামনে আসতেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
কী কী উপসর্গ লক্ষ্য করা যায় এই রোগে?
গিলাঁ বারে সিনড্রোম একটি অটো ইমিউন ডিসঅর্ডার। এই রোগের অন্যতম উপসর্গ হলো দুর্বল হয়ে যাওয়া, হাঁটা-চলায় সমস্যা, শ্বাসকষ্ট। শিশু চিকিৎসক প্রভাস প্রসূন গিরি জানিয়েছেন, প্রতি বছরই এই রোগ দেখা যায় বাংলায়। ২০২৪-এর অক্টোবর-ডিসেম্বর নাগাদ এই সংক্রমণে আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গিয়েছিল। যদিও তা নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সঠিক সময়ে চিকিৎসায় বড় ক্ষতি এড়ানো সম্ভব বলে তাঁরা জানাচ্ছেন। সমস্ত বয়সিরাই গিলাঁ বারে (জিবি) সিনড্রোমে আক্রান্ত হতে পারেন।
কেন নতুন করে চর্চায় গিলাঁ বারে (জিবি) সিনড্রোম?
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে গিলাঁ বারে সিনড্রোমে একাধিক ব্য়ক্তির অসুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল। এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় এই রোগে। আর এরপরেই নতুন করে জিবি সিনড্রোম নিয়ে উদ্বেগ ছড়ায়।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
আপাতত গিলাঁ বারে (জিবি) সিনড্রোম নিয়ে প্যানিক না করার পরামর্শ দিচ্ছেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অনিরূদ্ধ ঘোষ জানিয়েছেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে রোগীকে নিয়ে গেলে জিবি সিনড্রোমের ফলে বড় ক্ষতির সম্ভাবনা এড়ানো সম্ভব।