দিব্যেন্দু সরকার: সরকারি স্কুলে ভুয়ো নিয়োগ লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে! কে নিয়োগ করেছে তা কেউই বলতে পারছে না। নিয়োগ হওয়া কর্মীদের দাবি, তারা বেতন পাচ্ছেন না। স্কুলগুলির বক্তব্য, এমনিতেই কর্মীর অভাব, তাই তাদের কাজে লাগানো হয়েছিল। যেহেতু এনজিও থেকে পাঠাচ্ছে তাই নেওয়া হয়েছিল। ওদের বেতন কে দেবে সেটা আমরা জানি না। প্রতারিত আরামবাগ মহকুমার কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থী। কাজ করে বেতনের টাকা না পেয়ে থানার দ্বারস্থ প্রতারিতরা।
আরামবাগ মহকুমার বেশিরভাগ স্কুলে এনজিওর নাম করে গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ। ফোনের মাধ্যমেই বিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে গ্রুপ ডির কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল ২০২৪ এর জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে। স্কুলে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চাকরিপ্রার্থীদের বলা হয় এনজিওয়ের মাধ্যমে তাদের ১২ হাজার টাকা বেতন হবে। বিভিন্ন স্কুলে গ্রুপ ডির অর্থাৎ ঝাড়ু দেওয়া থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন প্রভৃতি কাজ করতে হবে। কাজের আশায় অনেকেই সেই পথে পা বাড়ায়। আবার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে কোথাও চক ডাস্টার, ফিনাইল অথবা অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়ে আস্থা অর্জন করে কর্মী নিয়োগ করা হয় । তবে মাস কয়েক যেতে না যেতেই যখন চাকরি প্রার্থীরা বুঝতে পারে তারা প্রতারণার শিকার তখনই স্কুলের প্রধান শিক্ষক থেকে টিআইসিদের কর্মীরা জানায় তারা বেতন পাচ্ছেন না। বিদ্যালয় গুলিও সব জানিয়ে দেয় তাদের বিষয়টিতে কিছু করার নেই। যারা নিয়োগ করেছিল তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিদ্যালয় থেকে কিছু দেওয়া হবে না। কোন স্কুলে তিনজন কোন স্কুলে দু'জন এইভাবে নিয়োগ হতে হতে সংখ্যাটা হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আরামবাগ মহকুমা জুড়ে শতাধিক স্কুলের এমনই হাল। আরামবাগ থানায় বেশ কয়েকজন অভিযোগ জানানোর পরই বিষয়টি নজরে আসে।
যেহেতু এনজিও বলেছে তাই তারাও নিয়ে নিয়েছেন। এমনটাই বলছে বহু স্কুল। অন্যদিকে টাকা দিয়ে চাকরি পেয়ে বিদ্যালয়ে কাজ করে বেতন না পাওয়ায় হতাশ চাকরিপ্রার্থীরা। তারা যে প্রতারিত হয়েছেন সেটা এখন বুঝতে পারছেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে এনজিওর নাম করে কোনও চক্র বেকারদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে বিদ্যালয়গুলিকে প্রলোভন দেখিয়ে গ্রুপ ডির কর্মী নিয়োগ করল? বিদ্যালয়গুলি কেন সরকারি ডিআই অথবা এডিআই অফিসে কর্মী নিয়োগের বিষয়টি জানালেন না ? এখানেও কি বড় মাথা রয়েছে যে বিষয়টি চেপে যাওয়া হল?
আরামবাগের এডিআই অফিসে গিয়েও দেখা পাওয়া গেল না এডিআইএর সঙ্গে। এডিআই পলাশ রায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে এডিআই অফিসের কর্মীরা বিষয়টি শুনেও তাজ্জব। প্রতারিতদের দাবি, তারা স্কুলেরই রেজিস্টার খাতায় সিগনেচার করতেন।