• চাষের জল থেকে মৎস্য আহরণ, ঐতিহাসিক খাল সংস্কারে খুশি মহিষাদল
    এই সময় | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের হিজলি টাইডাল ক্যানেলটি সংস্কারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অবশেষে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে খালটির সংস্কার করা হয়েছে। ফলে এখন মাছ ধরা থেকে শুরু করে সেচের জল ওই এলাকার বাসিন্দাদের বহু প্রয়োজন মেটাচ্ছে এই ঐতিহাসিক খাল।

    মহিষাদলের এই খালটির ইতিহাস অনেক পুরোনো। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২১ অক্টোবর, জমিদারির তদারকি করতে এই ক্যানেল ধরেই পাড়ি দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছিল এই ঐতিহাসিক খালটি। কচুরিপানায় সবুজ হয়ে গিয়েছিল। খাল বলে চেনার উপায় ছিল না।

    সংস্কারের পর, এখন ক্যানেলের দুই ধারে বসবাসকারী পরিবারগুলি খালের জল দিয়ে ফল, ফুল, সবজির চাষ করছেন। আবার কোনও কোনও পরিবার খালে জাল ফেলে মাছ ধরছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আয়েশা বিবি জানিয়েছেন, ‘অভাবের সংসার। খালে ভালো মাছ পাওয়া যায়। তাই জাল ফেলে মাছ ধরি। সেই মাছ পরিবারের সবাইকে রান্না করে খাওয়াই। আবার কিছু মাছ বিক্রিও করি। তাতে বাড়তি উপার্জনও হচ্ছে।’ জানা গিয়েছে, খালের জলে অন্যান্য মাছের সঙ্গে মিলছে চিংড়ি মাছও।

    জয়দেব দাস নামে আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন, ‘চাষের কাজের জন্য অনেক জলের প্রয়োজন। এত দিন কচুরিপানা ছাড়াও নোংরা আবর্জনা জমেছিল খালে। তাই, চাষের জন্য পর্যাপ্ত জল পাওয়া যেত না। এখন তা পাওয়া যাচ্ছে। চাষের কাজে আমাদের খুব সুবিধা হয়েছে।’

    স্থানীয় বিধায়ক তিলককুমার চক্রবর্তীর দাবি, খালটির সংস্কারের ফলে সেখানকার মানুষ স্বনির্ভর হচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘মহিষাদলের হিজলি টাইডাল ক্যানেলটি আমাদের খুবই প্রিয়। এই ক্যানেল দিয়ে একসময় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-সহ অনেক জ্ঞানীগুণী মানুষ যাতায়াত করতেন। আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর খালটির সংস্কার করা হয়েছে। খালটি যাতে কচুরিপানায় ভরে না যায়, সেই দিকে আমরা সব সময় নজর রাখছি। খালের জল পরিষ্কার হওয়ার পর, তা এলাকার মানুষ কাজে লাগছে। খালে জাল ফেলে মাছ ধরে, তা বিক্রি করে অনেকে স্বনির্ভর হচ্ছেন।’

  • Link to this news (এই সময়)