• ছাত্রের গড়া মূর্তিতেই সরস্বতী পুজো হবে রামপুরহাটের স্কুলে  
    বর্তমান | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: স্কুলে সরস্বতী পুজো। আর এবছর সেই পুজো হবে স্কুলেরই এক ছাত্রের গড়া মূর্তিতে। রামপুরহাটের শরদিন্দু মজুমদার বিদ্যায়তন কর্তৃপক্ষের তরফে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুলেরই দশম শ্রেণির ছাত্র স্বাধীন দাসের শিল্পীসত্তাকে এবার স্বীকৃতি দিতে চলেছে স্কুল। স্কুলেরই ছাত্রের তৈরি সরস্বতী প্রতিমা এবছর পুজো হবে জেনে স্বভাবতই অন্যান্য পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভীষণ খুশি।


    স্বাধীনের বাড়ি রামপুরহাট পুরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের কালিসাঁড়া পাড়ায়। ছোট থেকেই তার মূর্তি গড়ার শখ। পাড়ার মন্দিরে দুর্গা প্রতিমা বানান ধর্মরাজতলা পাড়ার শিল্পী উৎকৃষ্ট মণ্ডল। স্বাধীন সেখানে দাঁড়িয়ে সেই কাজ দেখত। কখনও সখনও মাটিও মেখে দিত। এরপর উৎকৃষ্টবাবু প্রায়ই স্বাধীনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যেতেন। তাঁকে দেখেই সে মূর্তি বানানোর কাজ শিখে ফেলে। চার বছর ধরে পড়াশোনার ফাঁকে সে কালী, লক্ষ্মী, বিশ্বকর্মার মতো নানা দেবদেবীর মূর্তি গড়েছে। এখন সে দক্ষ শিল্পী। এবার নিজের পাড়াতেই সে বেশ কয়েকটি সরস্বতী প্রতিমা বানিয়েছে। তার শিল্পকর্ম দেখে অনেকেই প্রতিমা নেওয়ার বায়না দিয়েছেন। এদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন, তাঁদেরই এক ছাত্র সরস্বতী প্রতিমা গড়ছে। খবর পেয়ে স্বাধীনের কাছে স্কুলের জন্য প্রতিমার বরাত দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের সহকারী শিক্ষক অনিতসুন্দর দাস বলেন, স্কুলের ছাত্রের গড়া সরস্বতী মূর্তিই স্কুলে পুজো করা হবে। এই উদাহরণ খুব একটা বেশি মেলে না। ওই পড়ুয়ার শিল্পীসত্তা ও সৃজনশীলতাকে স্বীকৃতি দিতেই ওকে প্রতিমার বরাত দেওয়া হয়েছে। প্রতিমা তৈরি দেখে আমরা সন্তুষ্ট।


    স্কুল, টিউশন, পঠন-পাঠনের মাঝে সময় বের করে স্বাধীন জোরকদমে প্রতিমা তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তার বাবা মিঠুনকুমার দাস রান্নার কাজ করেন। তিনি বলেন, শিল্পকর্মের প্রতি ছেলের অগাধ ভালোবাসা রয়েছে। সেই ভালোবাসার টানে এবার ও একসঙ্গে বেশ কয়েকটি মূর্তি গড়ার কাজ শুরু করেছে। তার মধ্যে রয়েছে প্রথমবার নিজের স্কুলের সরস্বতী প্রতিমা তৈরির বরাত। তিনি আরও বলেন, প্রতিমা বিক্রির আয় থেকে ছেলে নিজের দু’টি টিউশন ক্লাস, কম্পিউটার শেখা ও পড়াশোনার পিছনে খরচ করে।


    স্বাধীন বলে, আমি যে প্রতিমা তৈরি করি তা কোনওদিন স্কুলে জানাইনি। এবছর স্কুলের স্যাররা তা কোনওভাবে জানতে পেরেছেন। তাই আমাকে স্কুলের সরস্বতী প্রতিমার বরাত দিয়েছেন। আমিও মনে প্রাণে চেয়েছিলাম আমার তৈরি সরস্বতী প্রতিমা স্কুলে পূজিত হোক। আমার প্রতি ভরসা রেখে প্রতিমার বরাত দেওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)