• পথ দুর্ঘটনা রুখতে এবার কোমর বেঁধে নামছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন
    বর্তমান | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: পথ দুর্ঘটনা রুখতে বাঁকুড়ার ব্ল্যাক স্পটগুলিতে যৌথ পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তর ও পুলিসের যৌথ পরিদর্শনে সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়াররাও অংশ নেবেন। সোমবার বাঁকুড়া কালেক্টরেটের কনফারেন্স হলে জেলাস্তরের পথ নিরাপত্তা কমিটির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই বৈঠকে বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন, পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি সহ অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে এবারই প্রথম জেলার বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকদেরও ডাকা হয়। সম্প্রতি, এ জেলার জয়পুরে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় টোটোর যাত্রী একরত্তি শিশুর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনা জেলা পুলিস-প্রশাসনের আধিকারিকদের নাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও জেলায় পরপর দুর্ঘটনায় গত কয়েকমাসে অনেকে হতাহত হয়েছে। ফলে এ ব্যাপারে কোমর বেঁধে ময়দানে নামতে চাইছে প্রশাসন। 


    জেলাশাসক বলেন, পুলিস ও ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে জেলার দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা পরিদর্শন করার জন্য পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনা রুখতে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে তা পরিদর্শন করে আধিকারিকরা ঠিক করবেন। এব্যাপারে দ্রুত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলায় ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। 


    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ায় প্রতিবছর দুর্ঘটনায় গড়ে শতাধিক মানুষ হতাহত হয়। দুর্ঘটনায় মৃতদের বেশিরভাগই বাইক আরোহী। হেলমেট বিহীন বাইক আরোহীদের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে, এমন রাস্তার মোড় বা বাঁককে ‘ব্ল্যাক স্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাঁকুড়া সদর থানার পাশাপাশি বিষ্ণুপুর, ওন্দা, বড়জোড়া ও তালডাংরা থানা এলাকায় সবচেয়ে বেশি ব্ল্যাক স্পট রয়েছে। ফলে ওইসব থানার ওসি, আইসি ও সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিসের আধিকারিকদের এব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। 


    এক পুলিস আধিকারিক বলেন, রাস্তায় বাম্পার বা স্পিড ব্রেকার তৈরি, আলোর প্রতিফলন ঘটে এমন বোর্ড বসানো সহ একাধিক পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। এলাকা পরিদর্শনের পর আরও কী কী করা যায়, তা আমরা খতিয়ে দেখব। জঙ্গলমহলের রাস্তাঘাট ঝাঁ চকচকে হওয়ার কারণে গাড়ির গতি আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গিয়েছে। দুর্ঘটনা বৃদ্ধির এটিও অন্যতম কারণ। তবে বেপরোয়াভাবে বাইক, চারচাকা গাড়ি চালানোর জন্যও অনেকে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ট্রাক, ট্রেলার, ডাম্পারের সঙ্গে বাইক বা ছোট চারচাকা গাড়ির সংঘর্ষের ফলে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। অনেকে যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।  
  • Link to this news (বর্তমান)