নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজারো প্রতারণার ফাঁদ। কীভাবে সেই ফাঁদ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখা সম্ভব, তারই পাঠ নিল জলপাইগুড়ির বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি শহরের তিস্তা উদ্যানে সাইবার ক্রাইমের পাশাপাশি হিউম্যান ট্রাফিকিং, যৌন হেনস্তার মতো বিষয় নিয়ে সচেতন করা হয় ছাত্রছাত্রীদের। জলপাইগুড়ি মহিলা থানা, সাইবার ক্রাইম থানার সঙ্গে এই উদ্যোগে শামিল হয় বনদপ্তরও।
জলপাইগুড়ি মহিলা থানার আইসি ডিকি লামু ভুটিয়া বলেন, অনেক সময় শিশুরা যৌন হেনস্তার শিকার হয় কিংবা তাদের সঙ্গে যৌন নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়াতেও নানারকম প্রতারণার ফাঁদ পাতা থাকে। কোনওভাবে যাতে পড়ুয়ারা বিশেষ করে ছাত্রীরা ওই ফাঁদে না দেয়, সেব্যাপারে এদিন তাদের সচেতন করা হয়েছে। একইসঙ্গে আড়কাঠিরা কীভাবে টোপ দিয়ে মেয়েদের ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে পাচার করে দেওয়ার চেষ্টা করে, সেটাও বলা হয়েছে তাদের। রাস্তায় কখনও বিপদে পড়লে ছাত্রীরা সাহায্যের জন্য থানায় কিংবা পুলিসের উইনার্স টিম, পিঙ্ক পুলিসকে কত নম্বরে ফোন করবে তা জানানো হয়েছে।
এ ধরনের সচেতনতার পাঠ আরও বেশি করে হওয়া দরকার বলে মনে করেন পড়ুয়া থেকে অভিভাবক এমনকী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সচেতনতার পাঠ নিতে আসা জলপাইগুড়ি সুনীতিবালা সদর গার্লসের একাদশের ছাত্রী তানিশা সেন বলে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কীভাবে আমরা নিজেদের সুরক্ষিত করব কিংবা না বুঝে যদি কোনও ভুল হয়েও যায়, কীভাবে আমরা সেখান থেকে নিজেদের বের করে নিয়ে আসব, সেসম্পর্কে এদিন আমরা পুলিস আধিকারিকদের কাছ থেকে জানতে পারলাম। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যত বেশি করে আলোচনা হবে, তত বেশি করে মেয়েরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবে বলে মনে করি।
সদর গার্লসের সহ শিক্ষিকা সুবর্ণা দাস বলেন, এখন ছেলেমেয়েদের হাতে হাতে মোবাইল। প্রায় প্রত্যেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ। এরফলে অনেকে যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় পাতা ফাঁদে পড়ে বিপাকে পড়ছে, অনেকে আবার অপরাধ জগতের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ছে। এদিন পুলিস আধিকারিকদের কাছ থেকে অনেক অজানা বিষয় জানতে পেরেছি। আমরাও ক্লাসে বিষয়গুলি আরও বেশি করে মেয়েদের সামনে তুলে ধরতে পারব। এতে সুফল মিলবে বলে আশা করি।
বনদপ্তরের উদ্যান বিভাগের রেঞ্জ অফিসার পাপন মহন্ত বলেন, বনদপ্তরের আধিকারিকরা সাধারণত জঙ্গল, বন্যপ্রাণের সুরক্ষা নিয়েই ভাবেন। কিন্তু আমরা ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষিত করতে এবার পুলিসের উদ্যোগে শামিল হয়েছি। এ ধরনের কর্মসূচি আরও করার ইচ্ছে রয়েছে আমাদের। - নিজস্ব চিত্র।