সন্দীপ বর্মন, মাথাভাঙা: বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ঘর বানানোর কাজ শুরু করেছেন উপভোক্তারা। এজন্য চাহিদা ব্যাপক হয়েছে অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীর সঙ্গে বালিরও। অভিযোগ, মাথাভাঙা মহকুমাজুড়ে একাধিক জায়গায় অবৈধভাবে নদী থেকে তোলা হচ্ছে বালি। দেদার বালি চুরির ঘটনায় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। যদিও মাথাভাঙা-১ ভূমি ও সংস্কার দপ্তর জানিয়েছে, সম্প্রতি বালি চুরি যেমন বেড়েছে, তেমনই অভিযান চালিয়ে একাধিক জায়গা থেকে বালি ভর্তি পিকআপ ভ্যান, ট্রাক্টর, ডাম্পার আটক করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহে জরিমানা বাবাদ আদায় করা হয়েছে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। ধারাবাহিকভাবে এই অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, মাথাভাঙা মহকুমার ধরলা, মানসাই, সুটুঙ্গা নদীর একাধিক জায়গা থেকে বেআইনিভাবে বালি চুরির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মাঝেমধ্যে অভিযান চালায় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। তারপর কিছুদিন বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ হয়। ফের তা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছে উপভোক্তাদের। সেই টাকা পাওয়ার পর কাজও শুরু করেছেন বাসিন্দারা। ইট, পাথরের সঙ্গে পাকা ঘর তৈরির জন্য লাগছে বালি। চাহিদা ব্যাপক থাকায় তার সুযোগ নিচ্ছে বালি মাফিয়ারা।
ধরলা, মানসাই ও সুটুঙ্গা নদীর একাধিক জায়গা থেকে বালি তুলে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে গ্রামে গ্রামে। কোথা থেকে বালি নিয়ে আসা হচ্ছে তা জানানো হচ্ছে না উপভোক্তাদের। কাউকে গভীর রাতে, কারও বাড়িতে ভোরে বালির গাড়ি বালি পৌঁছে দিচ্ছে। ব্যাপক হারে বালি চুরির ঘটনা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশ প্রেমীরা। একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সম্পাদক অধ্যাপক তাপস বর্মন বলেন, নিয়মের তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালি তোলার ফলে নদী ভাঙন ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। এতে কৃষিজমি সহ বাড়িঘর ভাঙনের কবলে পড়বে। এনিয়ে সর্তক হওয়া উচিত প্রশাসনের।
মাথাভাঙা-১ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক রাজা দাশগুপ্ত বলেন, বালি চুরির প্রবণতা বেড়েছে, আমরাও ধারাবাহিক অভিযান করছি। ইতিমধ্যে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে এমন অভিযান চলছে। নদী সংলগ্ন বাসিন্দাদের আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। - নিজস্ব চিত্র।