• বাণিজ্য সম্মেলন থেকেই শিল্প সেতু,   গঙ্গাসাগর ব্রিজের শিলান্যাস মমতার
    বর্তমান | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত ১৩ বছরে আম জনতার সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিকাঠামো উন্নয়নেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এই সাফল্যকে হাতিয়ার করে নবান্ন বাংলায় বিনিয়োগ টানতে উদ্যোগী হয়েছে। সেই সূত্রেই এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে প্রায় ২০০০ কোটি অর্থমূল্যের দু’টি বৃহৎ প্রকল্পের শিলান্যাস করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ ও ৬ জানুয়ারি রাজ্যে বসছে বাণিজ্য সম্মেলনের আসর। সূত্রের খবর, প্রথম দিনই তিনি গঙ্গাসাগর সেতু ও শিল্প সেতুর শিলান্যাস করবেন। এই দুই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন কয়েক কোটি মানুষ। সাগরদ্বীপ সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দাদের পাশাপাশি গঙ্গাসাগর সেতুর সুবিধা পাবেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। অন্যদিকে, শিল্প সেতু তৈরি হলে উপকৃত হবেন বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের মানুষ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে বাড়বে বিনিয়োগও। 


    দু’টি  প্রকল্পই রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছে পূর্তদপ্তর। আগেই প্রকাশ্যে এসেছে গঙ্গাসাগর সেতুর নকশা। এবার অনুমোদিত হয়ে গেল শিল্প সেতুর নকশাও। বর্ধমানে দামোদর নদের উপর ৫০ বছরের বেশি পুরনো কৃষক সেতুর অবস্থা বেহাল হয়ে যাওয়ায় তার পাশেই শিল্প সেতু গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। ৬৪০ মিটার দীর্ঘ এবং তিন লেনের ‘এক্সট্রা ডোজ কেবল স্টেড’ ব্রিজ হবে এটি। খরচ হবে ৩৪৮ কোটি টাকা। পুরনো ব্রিজকে পাশে রেখে নতুন ব্রিজটি তৈরির পর তা কেমন দেখতে হবে,  সেই নকশাও প্রকাশ্যে এসেছে। বিশেষ আলোকসজ্জায় সাজিয়ে তোলা হবে অনেকটা দ্বিতীয় হুগলি সেতুর আদলে তৈরি এই সেতুকে। রাতে সেতুটি কেমন দেখতে লাগবে, সেই নকশাও তৈরি করা হয়েছে। 


    এদিকে, সোমবারই রাজ্য মন্ত্রিসভা গঙ্গাসাগর সেতু তৈরির জন্য সরাসরি জমি কেনার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দিয়েছে। এই সেতু তৈরি করতে মোট ১২.৯৭ একর জমি রাজ্য সরকারকে কিনতে হবে। এর মধ্যে কাকদ্বীপের দিকে ৭.৯৫ একর এবং কচুবেড়িয়ার দিকে ৫.০১ একর জমি কিনতে হবে। কেন্দ্র কথা না রাখায় নিজস্ব কোষাগার থেকে খরচ করেই গঙ্গাসাগর সেতু নির্মাণ করছে রাজ্য। মূল ভূখন্ডের সঙ্গে সাগরদ্বীপকে জুড়বে এই সেতু। খরচ হবে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা। জমি কেনার ছাড়পত্র দিয়ে এই সেতুর কাজে আরও গতি আনতে উদ্যোগী হল নবান্ন। প্রায় ৫ কিলোমিটার লম্বা এবং চার লেনের সেতুটি কাকদ্বীপ এবং কচুবেড়িয়াকে যুক্ত করবে। সেতুর দু’পাশেই থাকবে ফুটপাত। গঙ্গার মোহনায় অবস্থিত সাগরদ্বীপের মানুষকে যাতায়াতের জন্য বর্তমানে জলপথের উপর নির্ভর করতেই হয়। জোয়ার-ভাটার তারতম্যের কারণে পারাপারে বিস্তর ঝক্কিও পোহাতে হয় তাঁদের। এছাড়া, এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় প্রায় ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়েছে। ১৫০০ কোটি টাকা খরচে প্রস্তাবিত সেতুটি বাস্তবায়িত হলে ফি-বছর বিপুল সংখ্যাক পুণ্যার্থী উপকৃত হবেন। সেই সঙ্গে সারা বছর সাগরদ্বীপে পর্যটকের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে আশাবাদী রাজ্য। দু’টি সেতুর ক্ষেত্রেই কজে শেষের সময়সীমা চার বছর বলে জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)