নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: চুঁচুড়ায় গঙ্গা দূষণ রুখতে এবার স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বানাবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সম্প্রতি পর্ষদের কর্তারা এব্যাপারে চুঁচুড়া পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত প্লান্টের জায়গাও পরিদর্শন করা হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চুঁচুড়ার তামলিপাড়া ঘাটের কাছে ওই স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (এসটিপি) তৈরি হবে। পুর কর্তাদের দাবি, ইতিমধ্যেই চুঁচুড়ায় একটি সুসংহত এসটিপি তৈরি করছে কেএমডিএ। তার পাশাপাশি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ পৃথকভাবে এসটিপি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, যা বেনজির। এর ফলে সুবিধা হবে পুরসভার।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের যাবতীয় নিকাশির জল গঙ্গায় পড়ে। ডাচ আমলের সেই স্যুয়ারেজ সিস্টেমকে বিশেষভাবে সাজিয়ে তুলছে কেএমডিএ। কিন্তু তামলিপাড়া ঘাটের কাছে এসটিপি করার কোনও পরিকল্পনা কেএমডিএ প্রকল্পের মধ্যে নেই। কিন্তু সেখানে জলনিকাশির একটি পথ আছে। সম্প্রতি এনিয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বিশেষ দল পরিদর্শনে এসেছিল। তারপরেই নিজেরা পৃথক প্রকল্প করবে বলে জানায় পুরসভাকে। পুরসভার সিআইসি সদস্য জয়দেব অধিকারী বলেন, গঙ্গা দূষণ রোধের জন্য তামলিপাড়া ঘাটের কাছে এসটিপি করার প্রয়োজন ছিল। মূলত, একটি অভিযোগের ভিত্তিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দল চুঁচুড়ায় এসেছিল। আমরা তাঁদের কাছে বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরি। শেষ পর্যন্ত পর্ষদ নিজেরাই ওই প্রকল্প করে দেবে বলে আমাদের জানায়। শহরের উন্নয়ন ও গঙ্গা দূষণ প্রতিরোধে ওই প্রকল্প কার্যকর করা হবে। সেকারণে আমরাও সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছি। পুরসভার সাফাই বিভাগ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ওই প্রকল্পের জন্য তৎপরতা শুরু হয়েছে।
চুঁচুড়ার নিকাশি ব্যবস্থা এখনও ডাচ আমলের ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা নির্ভর। মাটির অনেক গভীরে থাকা নিকাশি নালার জল মূলত গঙ্গায় গিয়ে পড়ে। গঙ্গাপাড়ে অনেকগুলি নিকাশি নালার মুখ দেখতে পাওয়া যায়। সেগুলিতে কিছুটা আধুনিকতার পরত লাগলেও মূলত তা ডাচ আমলের। ওই সমস্ত নিকাশি নালার জল পরিশুদ্ধ করার জন্য পুরদপ্তর একটি সুসংহত প্রকল্প তৈরি করছে। কিন্তু তাতে গঙ্গার পুরো পাড় এলাকা দূষণমুক্ত হচ্ছে না, এমনই অভিযোগ গিয়েছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে। তারপরেই পর্ষদের দল তদন্তে আসে। তাতেই পুরসভার ভাগ্যে জুটেছে নতুন প্রকল্প। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুরকর্তা বলেন, যিনি অভিযোগ করেছিলেন তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। কারণ, পুরসভার পক্ষে এসটিপি প্লাট তৈরি করা সম্ভব ছিল না। সেই কাজ এখন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদই করে দেবে। তাতে চুঁচুড়ার গঙ্গা সার্বিক দূষণমুক্ত হবে।