• উদ্বোধন হতেই উপচে পড়ল ভিড়, এবার বইমেলায় ৫০ লক্ষেরও বেশি পাঠক, প্রত্যাশায় মমতা
    বর্তমান | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: হাতের মুঠোয় স্মার্টফোন। তার মধ্যেই যেন বন্দি গোটা পৃথিবী! ওটিটি থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার হরেক প্ল্যাটফর্ম উন্মুক্ত করে দিয়েছে তথ্য, জ্ঞান ও বিনোদনের অফুরান ভাণ্ডার। তারপরেও ছাপা অক্ষরের প্রতি পাঠকের প্রেম অটুট। বছর বছর কলকাতা বইমেলার ক্রমবর্ধমান ভিড় সেটাই প্রমাণ করে। গতবার বইমেলায় হাজির হয়েছিলেন প্রায় ২৭ লক্ষ পাঠক। বিক্রি হয়েছিল ২৩ কোটি টাকার বই। মঙ্গলবার ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চ থেকে বইপ্রেমীদের আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,, ‘বই পড়ুন, বই কিনুন। বই বৃক্ষ। বই বাড়ির শোভা বাড়ায়। আগেরবার ২৭ লক্ষ পাঠক এসেছিলেন। আমার অনুমান, এবার ৫০ লক্ষ আসবেন। আরও ছাড়িয়ে যেতে পারে।’ মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধনের পরই ভিড় শুরু হয় মেলা প্রাঙ্গণে। সন্ধ্যাতেই ধরা দেয় চেনা আমেজ। স্টলে স্টলে ভিড়, কেনাকাটা, কফির কাপে চুমুক।


    উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে এদিন বিকেলে সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের মেলা প্রাঙ্গণে ‘চাঁদের হাট’ বসেছিল। বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী থেকে শুরু করে মন্ত্রী, আমলা, জনপ্রতিনিধি, গুণীজন—উপস্থিত ছিলেন সবাই। এবার বইমেলার ফোকাল থিম কান্ট্রি জার্মানি। তাই উপস্থিত ছিলেন দিল্লির জার্মান দূতাবাসের অ্যাম্বাসাডর ডঃ ফিলিপ আকারমান, গ্যোটে ইনস্টিটিউটের (সাউথ এশিয়া) ডিরেক্টর ডঃ মার্লা স্টুকেনবার্গ প্রমুখ। সাহিত্যিক আবুল বাশারকে ‘গিল্ড লাইফটাইম লিটারারি অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয় এদিন। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা তিনটি বইয়েরও উদ্বোধন হয়েছে। জার্মান অ্যাম্বাসাডর বক্তৃতায় কলকাতাকে ‘ইন্টেলেকচুয়াল অ্যান্ড লিটারারি হাব’ বলে উল্লেখ করেন।


    এদিন মেলা প্রাঙ্গণের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। তবে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাধারণের প্রবেশের অনুমতি ছিল না। পরে গেট খুলতেই পিলপিল করে ঢুকতে থাকেন বইপ্রেমীরা। প্রথমদিনেই ৫ বছরের সন্তানকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বেহালার নবনীতা হালদার। বলেন, ‘প্রথমদিন ফাঁকা পাব বলে এসেছিলাম। পরে তো আবার আসবই। কিনেছি বইও।’ 


    মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবার বইমেলার উদ্বোধনে আসি। এবার বলেছিলাম, আমায় বাদ দিন। কিন্তু ছাড়ল না।’ থিম কান্ট্রির প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘আমাদের গ্রেট হিরো নেতাজির সঙ্গে জার্মানির অত্যন্ত গভীর সম্পর্ক ছিল। তাঁর মেয়ে জার্মানিতে থাকেন। আমি দেখাও করেছি।’ ‘জাগো বাংলা’ স্টলের এবারের থিম মা-মাটি-মানুষ। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাটির বাড়ি, ভিতরে আস্ত অর্জুন গাছ। কারণ মাটিই সম্পদ। তাকে ভুলে গেলে চলবে না।’ বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতির কথাও উঠে আসে। আয়োজক পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে এবং সভাপতি ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বইপ্রেমীদের আহ্বান করেছেন। আমরাও চাই, লক্ষ লক্ষ পাঠকের পদচারণায় গমগম করুক বইমেলা প্রাঙ্গণ।’
  • Link to this news (বর্তমান)