• বিধাননগর নর্থ থানার ওসির বিরুদ্ধে ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা’
    বর্তমান | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • সুকান্ত বসু, কলকাতা: আদালতের আদেশ অমান্য করায় বিধাননগর নর্থ থানার ওসি প্রতীক বসুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল আদালত। ওই পুলিস আধিাকারিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিধাননগরের পুলিস কমিশনারকে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক প্রদীপকুমার অধিকারী এই চাঞ্চল্যকর নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে পুলিস কমিশনারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে আদালত। ইনসপেক্টর পদমর্যাদার এক পুলিস অফিসারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবর ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক শোরগোল শুরু হয়েছে বিধানগর কমিশনারেটের অন্দরে।


    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানা এলাকায় এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় পুলিস বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করে মৃতার শ্বশুরবাড়ির তিনজনের বিরুদ্ধে। সেই মামলারই তদন্তকারী অফিসার ছিলেন প্রতীক বসু। মামলার তদন্ত শেষ করে চার্জশিট পেশ করা হয়। চার্জ গঠন করে শুরু হয় মূল মামলার বিচার। পরবর্তী কালে গাইঘাটা থানার ওই পুলিস অফিসার বদলি হয়ে আসেন বিধাননগর নর্থ থানায়। এদিকে, মামলার শুনানি চলাকালে সাক্ষ্য‌ ঩দেওয়ার জন্য কোর্টের সমন পান প্রতীকবাবু। কিন্তু তিনি গরহাজির ছিলেন। আদালতে হাজির হতে না পারার কারণ হিসেবে তিনি আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত থাকার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত ওই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে না পেরে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই পরোয়ানা কার্যকর হয়নি। এমনকী, তার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখাও কোর্টের কাছে পেশ করা হয়নি। এই অবস্থায় ক্ষুব্ধ বিচারক বিষয়টি জেলার পুলিস সুপারের নজরে আনেন। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট আসার পর সম্প্রতি নতুন করে ফের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় ওই পুলিস অফিসারের বিরুদ্ধে। পরোয়ানা কার্যকর করা নিয়ে পুলিস কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়। 


    এদিকে, ওই পুলিস অফিসার আদালতে সাক্ষ্য দিতে না আসায় মামলার শুনানিও বন্ধ হয়ে যায়। এতে মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান সরকারি কৌঁসুলিদের একাংশ। এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক নীরদরঞ্জন ঘোষের মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আদালত যে পদক্ষেপ করেছে, তা সঠিক। কারণ, একজন পুলিস অফিসার আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসবেন না নানা কারণ দেখিয়ে, এটা চলতে পারে না।’ প্রবীণ আইনজীবী নবকুমার ঘোষ বলেন, ‘তদন্তকারী পুলিস অফিসারের সাক্ষ্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তিনিই যদি গরহাজির থাকেন, তাহলে মামলার পরিণতি কী হতে পারে, সহজেই অনুমেয়।’
  • Link to this news (বর্তমান)