• সরকারি হাসপাতালে নয়া রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন
    বর্তমান | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় পড়েছিল রাজ্যে। তারপরই সেখানে রিঙ্গার ল্যাকটেট (আরএল) স্যালাইন সরবরাহকারী সংস্থার বিভিন্ন জীবনদায়ী ওষুধ, স্যালাইন ও ইঞ্জেকশন সরবরাহ বন্ধ করেছে রাজ্য। তার মধ্যে আরএল, এনএস সহ ১৪টি ধরনের স্যালাইন ও অপরিহার্য ওষুধপত্রও রয়েছে। সেই জায়গায় রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে আগামী কাল, বৃহস্পতিবার থেকে সরবরাহ হতে চলেছে নয়া সংস্থার রিঙ্গার  ল্যাকটেট স্যালাইন। মঙ্গলবার সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর্স (সিএমএস) সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। 


    সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার প্রথম লপ্তে রাজ্যজুড়ে ৬৫ হাজার বোতল স্যালাইন আসছে। পরের কনসাইনমেন্টে ঢুকবে ১০ ফেব্রয়ারি থেকে পরপর। ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি। রোজ প্রায় ৮৫-৯০ হাজার বোতল আরএল স্যালা‌ইন আসার কথা। প্রসঙ্গত, রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে বছরে ৬০ লক্ষ বোতল আরএল স্যালাইনের প্রয়োজন পড়ে। মাসে গড়ে ৫ লক্ষ। 


    কিন্তু আরএল বিতর্ক থেকে শিক্ষা নিয়ে নয়া স্যালাইনকে ত্রুটিমুক্ত করতে কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে স্বাস্থ্যদপ্তর? সিএমএস-এর এক পদস্থ কর্তা বলেন, প্রথমত, নয়া সংস্থার রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন আমাদের হাসপাতালগুলির প্রয়োজন পড়লে স্থানীয়ভাবে কেনা হতো। দ্বিতীয়ত, এটি সরকার নথিভুক্ত সংস্থা। তৃতীয়ত, সংস্থার নিজস্ব টেস্ট রিপোর্ট ও একটি স্বীকৃত এনএবিএল ল্যাবের পরীক্ষা রিপোর্ট নেওয়া হচ্ছে। সেটাই নিয়ম। তারপরই সরবরাহরের চূড়ান্ত অনুমতি মিলবে। পাশাপাশি সরবরাহ চলাকালীন যেকোনও সময় আরএল-এর ব্যাচের নমুনা সংগ্রহ করে ফের পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সিএমএস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সরবরাহ বন্ধ হওয়া আরও ১৩ ধরনের ওষুধ ও ইঞ্জেকশনের বিকল্প ব্যবস্থার জন্য রাজ্য ফের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।   


    এদিকে কর্ণাটকে বিতর্ক হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিতর্কিত নির্মাতা সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের চোপড়ার কারখানা থেকে রিঙ্গার ল্যাক঩টেট ইঞ্জেকশনের একাধিক নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করিয়েছিল। ১৫ জানুয়ারি এসেছে সেই পরীক্ষার রিপোর্ট। সবক’টি নমুনার রিপোর্টই সন্তোষজনক। যদিও ৯ ডিসেম্বর সংশ্লিষ্ট নির্মাতা সংস্থারই চোপড়ার কারখানায় কেন্দ্র-রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের অফিসারদের যৌথ পরিদর্শন করে গুরুতর খামতি পেয়েছিল। তারপরই সরকারি হাসপাতালে তাদের সরবরাহ বন্ধ করার সুপারিশ দেয় পরিদর্শনকারী দল। ফলে স্যালাইন বিতর্কের নিরসনের জন্য এখন সকলের চোখ ঘটনার পর সংগ্রহ করা বিতর্কিত ব্যাচের আরএল-এর নমুনার পরীক্ষা রিপোর্ট। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধ্বে সেই রিপোর্ট আসতে পারে বলে জানিয়েছেন এক স্বাস্থ্যকর্তা। 


    এদিকে প্রায় তিনসপ্তাহ যমে-মানুষে টানাটানির পর মঙ্গলবার পিজি হাসপাতাল থেকে ছুটি পেলেন মিনারা বিবি নামে মেদিনীপুর মেডিক্যালের সেই প্রসূতি। মাম্পি সিং ও তাসরিম খাতুন নামে আরও দুই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রসূতির বিপদ অবশ্য এখনও পুরোপুরি কাটেনি। প্রথমজন সিসিইউ এবং দ্বিতীয়জন আইটিইউতে ভর্তি আছেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)