• গিল্যাঁ বারে প্রাণ নিল বারাসতের মেধাবী পড়ুয়ার
    এই সময় | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, আমডাঙা: বিরল স্নায়ুরোগ গিল্যাঁ বারে (জিবি) সিনড্রোম নিয়ে চিন্তা বেড়েছে মহারাষ্ট্রে। এমনই সন্ধিক্ষণে এই রোগের ছোবলে বাংলাতেও এক রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর বারাসতের প্যারীচরণ সরকার রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া অরিত্র মণ্ডল (১৭) জিবি সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে সোমবার মারা যায়। তার ডেথ সার্টিফিকেটেও বিরল জিবি সিনড্রোমের উল্লেখ রয়েছে।

    আমডাঙা ব্লকের বেড়াবেড়িয়া পঞ্চায়েতের তারাবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সুশান্ত মণ্ডল পেশায় দিনমজুর। স্ত্রী মালবিকা গৃহবধূ। মণ্ডল দম্পতির একমাত্র ছেলে অরিত্র। বাবা–মায়ের স্বপ্ন ছিল, সন্তান ভবিষ্যতে চিকিৎসক হবে। সেই স্বপ্ন নিয়েই নিম্নবিত্ত সুশান্ত ছেলেকে সায়েন্স নিয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন বারাসত সরকারি স্কুলে।

    পড়াশোনায় ফাঁকি ছিল না অরিত্রর। চলতি মাসের ২১ তারিখেও বেশি রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করে অরিত্র। ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠে মায়ের কাছে গিয়ে গলা ব্যথার কথা জানিয়েছিল সে।

    শীতের জন্য গলায় সাধারণ ব্যথা হয়েছে ধরে নিয়ে পরিবারের লোকজন বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি। ২২ তারিখ রাতেই জ্বর আসে ওই কিশোরের। ২৩ জানুয়ারি সকালে উঠে সে মা–বাবাকে জানায়, রাতে জ্বরের ওষুধও খেয়েছে সে। কিন্তু এর পর থেকেই ধীরে ধীরে অরিত্র আর দু’হাতে জোর পাচ্ছিল না।

    ছেলের মুখে এ কথা শুনে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন মা। চিকিৎসকের সামনে চেয়ারে বসা অবস্থায় আচমকাই অরিত্র পড়ে যায়। তড়িঘড়ি অরিত্রকে আনা হয় বারাসত মেডিক্যালে। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই অ্যাম্বুল্যান্সে করে কলকাতায় এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পর থেকে সময় যত গড়িয়েছে, অরিত্রর অবস্থার ততই অবনতি হতে শুরু করে। রাতে খাওয়ার ক্ষমতাটুকু ছিল না তার। ২৪ জানুয়ারি, শুক্রবার অরিত্রর শরীর এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে শৌচকর্ম করার ক্ষমতাও ছিল না তার। শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় অরিত্রকে ওই দিন দুপুরেই ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ)–এ স্থানান্তর করা হয়। সোমবার সকালে মৃত্যু হয় অরিত্রর।

  • Link to this news (এই সময়)