• শিশুকে বেধড়ক মারধর, মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় আঘাত, মা-সৎ বাবার কাণ্ডে শিউরে উঠলেন গ্রামবাসীরা ...
    আজকাল | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন স্বামীর সঙ্গে নির্বিঘ্নে ঘর বাঁধতে মায়ের কাছে নিজের ছোট্ট শিশুই পথের কাঁটা। সেই কাঁটা সরাতে গভীর রাতে শিশুকে ঘুম থেকে তুলে, মুখ বেঁধে এলোপাথাড়ি মার নিজের মা ও সৎ বাবার। শিশুর মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে ভেবে গুণধর স্বামী-স্ত্রী একটি ফাঁকা বাদাম চাষের মাঠের ঝোপের আড়ালে রাতের অন্ধকারে ফেলে দিয়ে আসে। সারারাত্রি সঙ্গাহীন অবস্থায় শিশু ঠান্ডার মধ্যে পড়েছিল মাঠে। ভেবেছিল রাতেই শেয়াল টেনে ছিঁড়ে খেয়ে দেহ লোপাট করে দেবে। কিন্তু শিশুটির ভাগ্যের জোরে টানা প্রায় ৮ ঘণ্টা পর সকালে জ্ঞান ফিরে আসে। তাও আবার লাল পিপড়ের কামড়ে। 

    কিছুটা দূরে একটি বাড়িতে শিশু নিজেই গুরুতর আহত অবস্থায় কোনওরকমে কাঁদতে কাঁদতে পৌঁছয়। আর ওই বাড়ির লোকজনকে দেখে জল একটু খেতে চেয়েই ফের উঠোনে জ্ঞান যায় শিশুটি। দুটো হাত ভাঙা, গায়ে-পায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন, মাথায় ফোলা আঘাতের চিহ্ন সহ রক্তাক্ত শিশুকে দেখেই শিউরে ওঠেন ওই পরিবারের লোকেরা। এমন লোমহর্ষক ঘটনা চাউর হতেই ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। এরপরই হাড়কাঁপানো নির্মম অমানবিক ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। উত্তেজনায় ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। 

    ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর থানা এলাকার উত্তর হলদিয়া গ্রামের খয়রান্ডা এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশ তড়িঘড়ি শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। বালিসাই বড়রাঙকুয়া হাসপাতালে ভর্তি করে তাকে। ছ'বছরের শিশু সামান্য সুস্থ হতেই তার বয়ান শুনে শিউরে ওঠেন পুলিশ থেকে গ্রামবাসীরা। 

    শিশুটির মা মামনি গিরি ও সৎ বাবা সুকদেব মণ্ডল। মারের চোটে শিশুর দু'টো হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। পিঠে পায়ে আঘাতের চিহ্ন, বিড়ির ছেঁকা দেওয়া হয়েছে শিশুকে, পুলিশ সূত্রে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পরিশেষে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় আঘাত করা হয়েছে। মাথায় আঘাত পেয়ে হাত ভাঙার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে শিশুটি জ্ঞান হারায়। এরপর শিশুটি মারা গেছে ভেবে বাড়ি থেকে দু'কিলোমিটার দূরে গভীর রাতে স্বামী-স্ত্রী মিলে একটি চীনেবাদামের মাঠের ঝোপের আড়ালে ফেলে দিয়ে আসে শিশুকে। 

    পুলিশ শিশুর মা ও সৎ বাবাকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে। তার আগে নিজের ছেলেকে মেরে ফেলার চেষ্টার কথা চাউর হতেই গ্রামবাসীরা ওই কীর্তিমান সৎ বাবা ও মাকে ধরে গণধোলাই দেয়। জানা গেছে, শিশুর বাবা অর্থাৎ মামনির নিজের স্বামী কার্তিক গিরির বছর পাঁচেক আগে মৃত্যু হয়েছে। এরপর উত্তর হলদিয়া গ্রামে ছোট্ট শিশুকে নিয়ে বাস করতেন মামনি। ফের আড়াই মাস আগে প্রেম করে সুকদেব মণ্ডলকে বিয়ে করে মামনি। এরপরই শিশুর সাথে অমানবিক অত্যাচার শুরু হয়ে যায়। বেশ কিছুদিন ধরে চলছিল শিশুকে মারধর করা। শেষমেশ ঝঞ্ঝাট হঠাতে ছ'বছরের শিশু সন্তানকে খুন করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় যুগল দম্পতি। 
  • Link to this news (আজকাল)