• সুন্দরবন ও কলকাতা রক্ষায় জোড়া প্রকল্প রাজ্য সরকারের
    বর্তমান | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লবণাক্ত জলের থাবা ক্রমশ প্রকট হচ্ছে গোটা সুন্দরবনে। তৈরি হচ্ছে পানীয় জলের সঙ্কট। অধিকাংশ এলাকায় নলকূপ থেকে লবণাক্ত জল উঠছে। সেই জল পান করা তো দূরের কথা, রান্নাবান্না বা গেরস্থালির অন্যান্য কাজেরও অনুপযুক্ত। শুধু তাই নয়, লবণত্ব বৃদ্ধির কারণে বিপদ বাড়ছে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের। আর এই ম্যানগ্রোভ না বাঁচালে কলকাতার ভবিষ্যতও বিপন্ন হয়ে উঠবে। সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির জেরে কলকাতা ডুবে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, একাধিক আন্তর্জাতিক রিপোর্টে। এমনকী সুনামির মতো আতঙ্কও কলকাতার পিছু ছাড়ে না। এই অবস্থায় ম্যানগ্রোভ অরণ্যের এই ক্ষয় ঠেকাতে দু’টি বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে নবান্ন। প্রথমটি হল বিশ্বব্যাঙ্কের সহযোগিতায় ৪১০০ কোটি টাকা খরচে ‘সাসটেইনেবল হার্নেসিং ওশান রিসোর্স অ্যান্ড ইকোনমি’ বা লোয়ার সুন্দরবন শোর প্রকল্প। নিম্ন বদ্বীপ অঞ্চলে বাঁধ সংক্রান্ত পরিকাঠামো সহ মাটিতে জমা হওয়া নুনের মাত্রা কমানোর এই প্রকল্পে ৩০ শতাংশ (১২৩০ কোটি টাকা) টাকা খরচ করবে রাজ্য সরকার। এই প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করতেই আজ, বুধবার রাজ্যে আসছে বিশ্বব্যাঙ্কের বিশেষ প্রতিনিধি দল। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ১১টি ব্লকে রূপায়িত হবে এই প্রকল্প। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে জনবসতি রয়েছে এমন ৩৯টি দ্বীপকে। এসব এলাকা পরিদর্শন করবেন বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা। তারপর গোসাবার দুলকিতে তাঁরা বৈঠক করবেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার নেতৃত্বাধীন রাজ্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। অন্যদিকে, উচ্চ বদ্বীপ অঞ্চলের জন্য নেওয়া ১,৩৫৩ কোটি টাকার দ্বিতীয় প্রকল্পটি হবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের সহযোগিতায়। এক্ষেত্রেও ৩০ শতাংশ খরচ (৪০৫ কোটি টাকা) করবে রাজ্য। 


    সুন্দরবন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হলে নষ্ট হবে কলকাতা শহরের ভারসাম্য। এই ভয়াবহ বিপদের হাত থেকে সুন্দরবন ও কলকাতাকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে এই কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মানসবাবু। এই প্রকল্পে বুজে যাওয়া মৃতপ্রায় খাল-বিল বাঁচিয়ে তুলে মিষ্টি জলের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। বিশ্বব্যাঙ্কের সহযোগিতায় প্রকল্প রূপায়ণের জন্য কেন্দ্রের ছাড়পত্রের প্রয়োজন পড়ে। এর জন্য প্রয়োজনীয় নথি ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে।  শীঘ্রই কেন্দ্রের ছাড়পত্র পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী রাজ্য। 
  • Link to this news (বর্তমান)