এই সময়, কলকাতা: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের সাসপেন্ড হওয়া চিকিৎসক পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘রক্ষাকবচ’ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, চিকিৎসক পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না সিআইডি। তবে তাঁকে তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে হবে, নির্দেশ হাইকোর্টের।
‘ত্রুটিপূর্ণ’ স্যালাইন বিতর্কের মধ্যেই মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক প্রসূতির মৃত্যু ও অন্য চার প্রসূতির গুরুতর ভাবে অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে সেখানকার বেশ কয়েকজন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করা হয়। ওই চিকিৎসকদের মধ্যে অন্যতম হলেন অ্যানাস্থেটিস্ট পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময়ে মামনি দাসকে তিনি অ্যানাস্থেশিয়া দিয়েছিলেন।
কিন্তু সেই অ্যানাস্থেশিয়ার কারণে ওই রোগীর মৃত্যু হয়নি। কারণ, সন্তানের জন্ম দেওয়ার দু’দিন পরে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। তাঁদের অভিযোগ, বিতর্কিত স্যালাইন নিয়ে তদন্ত না করে চিকিৎসকদের ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। কোনও কারণ ছাড়াই তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। এমনকি পুলিশ তাঁদের নামে এফআইআরও দায়ের করেছে। সেই এফআইআর খারিজের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পল্লবী বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের তরফে সরকারি কৌঁসুলি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ওই রোগীর মৃত্যুর পরে স্বাস্থ্য দপ্তর গোটা ঘটনার অনুসন্ধান করে। তাতে স্যালাইন নিয়ে যেমন তদন্তের কথা বলা হয়েছে, তেমনই ওই মৃত্যুতে চিকিৎসায় কর্তব্যে গাফিলতির কথাও জানানো হয়েছে রিপোর্টে।’
রাজ্যের কৌঁসুলি আরও জানান, এই স্যালাইন বিতর্কে ইতিমধ্যে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলা এখনও চলছে। এর পরেই বিচারপতি ঘোষ, মামলাকারী চিকিৎসককে ‘রক্ষাকবচ’ দিয়ে মামলাটি পাঠিয়ে দেন প্রধান বিচারপতির এজলাসে। প্রধান বিচারপতি মনে করলে জনস্বার্থ মামলার সঙ্গেই এই মামলার বিচার করবেন, অথবা তিনি মনে করলে ফের বিচারপতি ঘোষের সিঙ্গল বেঞ্চে মামলাটি পাঠিয়ে দেবেন।
পল্লবীর ‘রক্ষাকবচ’ নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে সাসপেন্ড হওয়া বাকি চিকিৎসকের প্রতিক্রিয়া জানার তাঁদের ফোন করা হলেও এ দিন রাত পর্যন্ত যোগাযোগ করা যায়নি।