• সাইকেল আরোহী বৃদ্ধকে পিষে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল গাড়ি, অমানবিক কাণ্ড চন্দননগরে...
    আজকাল | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • মিল্টন সেন, হুগলি:‌ পেছন থেকে ধাক্কা মেরে বৃদ্ধ সাইকেল আরোহীকে পিষে দিল দ্রুতগামী গাড়ি। এখানেই শেষ নয়। গাড়িতে আটকে থাকা বৃদ্ধর শরীর টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হল বেশ অনেকটা রাস্তা। অথচ অমানবিক গাড়ির চালক গাড়ি থামাল না। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল বৃদ্ধের। হাড়হিম করা মর্মান্তিক এই ঘটনার গোটা ছবি ধরা পড়ল সিসিটিভি ক্যামেরায়। অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোরে চন্দননগর থানার অন্তর্গত তেমাথা এলাকায়। মৃত বৃদ্ধ মধুসূদন বঙ্গ (৭৫)। বাড়ি চন্দননগর পুরনিগমের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাখনলাল সরণী এলাকায়। এদিন ভোরে কলকাতায় আত্মীয়ের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। পেশায় ব্যবসায়ী ওই বৃদ্ধ ট্রেন ধরার উদ্দেশে সাইকেল চালিয়ে মানকুন্ডু স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। চন্দননগর তেমাথার মন্দিরের কাছে পৌঁছতেই বিপত্তি। দ্রুত গতিতে ধেয়ে আসা একটি চার চাকা সুইফট গাড়ি তাঁকে পেছন দিক থেকে সজোরে ধাক্কা মারে। ধাক্কায় ছিটকে বেশ কিছুটা দূরে রাস্তায় গিয়ে পড়েন মধুসূদন বাবু। তবু গাড়ি দাঁড়ায়নি। উল্টে তাঁর উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পিষে দেয় মধুসূদন বাবুকে।

    কোনও কারণে গাড়িতে আটকে যায় তাঁর দেহের কোনও অংশ। বুঝতে পেরেও গাড়ি থামায়নি চালক। এই অবস্থাতেই ঘাতক গাড়ি বেশ কিছুটা রাস্তা টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় অসাড় রক্তাক্ত মধুসূদন বাবুকে। কিছুটা নিয়ে যাওয়ার পর অসাড় দেহ ছিটকে পরে রাস্তার পাশে। দ্রুত গতিতে পালিয়ে যায় গাড়িটি। তার পর রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনার মর্মান্তিক সিসিটিভি ফুটেজ। ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই চন্দননগর থানার পুলিশ গোটা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘাতক গাড়ি এবং অভিযুক্ত গাড়ি চালকের খোঁজ চালাচ্ছে। বৃদ্ধের পরিবারের তরফে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। মৃত মধুসূদন বাবুর পরিবার ও প্রতিবেশীদের দাবি, যখন দুর্ঘটনা ঘটল, গাড়ি তখনই থামিয়ে দিলে হয়ত বৃদ্ধের মৃত্যু হত না। হয়ত কোনও কুকর্ম করে পালাচ্ছিল। গাড়ির চালক মদ্যপ ছিল। নাহলে এমন অমানবিক কাণ্ড ঘটানো সম্ভব নয়। পুলিশও মনে করছে গাড়ির চালক মদ্যপ ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে হাতে আসা সিসিটিভি ফুটেজে গাড়ির নম্বর পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। তবে শহরে ঢোকা বেরোনোর বা গাড়ি চলাচলের সমস্ত রাস্তাতেই সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সমস্ত ছবি সংগ্রহ করা হচ্ছে। দ্রুত ঘাতক গাড়িটিকে চিহ্নিত করা হবে। একইসঙ্গে অভিযুক্ত চালককেও ধরে ফেলা সম্ভব হবে।
  • Link to this news (আজকাল)