• ‘দম বন্ধ হয়ে আসছিল…চোখে সব অন্ধকার’, ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা শোনালেন শিলিগুড়ির দীনেশ
    এই সময় | ২৯ জানুয়ারি ২০২৫
  • ‘ভোর তখন ৫টা। ছ’জন বন্ধু মিলে ঘাটে উঠছি। আচমকা পেছন থেকে সজোরে একটা ধাক্কা লাগল। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যাই। মনে হচ্ছিল, দম বন্ধ হয়ে আসছে। পুলিশ লাঠিচার্জ করছে। এর পর চোখের সামনে সব অন্ধকার। আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরল, তখন আমি স্থানীয় একটি চিকিৎসা ক্যাম্পে’— ফোনে কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় জখম শিলিগুড়ির বাসিন্দা দীনেশ পণ্ডিত। বর্তমানে সুস্থ রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বুধবারই অযোধ্যার দিকে রওনা হয়েছেন দীনেশ।

    শিলিগুড়ি পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের হাকিম পাড়ার বাসিন্দা দীনেশ। গত শুক্রবার শিলিগুড়ি হাকিমপাড়ার ছয় জন বন্ধু মিলে প্রয়াগরাজে পুণ্যস্নান করতে গিয়েছিলেন। ভোর পাঁচটায় স্নানে যান তাঁরা। স্নান সেরে ঘাটে উঠতেই আচমকা হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। এরই মাঝে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। সেই সময়ে দু’জন মহিলা প্রথম পরে যায়। এরপর তাঁদের উদ্ধার করে পুলিশ অ্যাম্বুল্যান্স তোলে। ওই সময় হুড়োহুড়ি আরও বেড়ে যায়। দীনেশ বলেন, ‘লাঠিচার্জ শুরু হতে আরও বেশ কয়েকজন সেখানে পড়ে যায়। সেই সময়ে আমি পড়ে যাই।’

    দীনেশের বক্তব্য অনুযায়ী, বাঁচার জন্য পড়ে গিয়েই হাত বাড়িয়ে দেন। হুড়োহুড়ির মাঝেই কয়েকজন যুবক তাঁকে উদ্ধার করেন। ততক্ষণে জ্ঞান হারিয়ে ছিলেন দীনেশ। পাশের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। ততক্ষণে বাকি পাঁচ বন্ধু দীনেশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছেন। সুস্থ হওয়ার পর বন্ধুদের খোঁজ করে তাঁদের সঙ্গে দেখা হয় দীনেশের। এর পর সকলে মিলে অযোধ্যায়ের উদ্দেশে রওনা দেন। সেখান থেকে শিলিগুড়িতে ফিরবেন তাঁরা। দীনেশ বলেন, ‘এত ভিড় আগে কখনও দেখিনি। মাটিতে পড়ে গিয়ে উঠতে পারছিলাম না। বড় বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরব।’

    পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা সংবাদমাধ্যমে দেখে চিন্তায় পড়ে যান দীনেশের পরিবারের লোকজন। বেলা ১১টা নাগাদ ছেলের ফোন আসলে পরিবারের লোকজনের চিন্তা দূর হয়। মা হীরামতি সামন্ত বলেন, ‘ছেলেরা ছ’বন্ধু মিলে কুম্ভে গিয়েছিল। সকালে ছোট ছেলে জানায় খবরে দেখাচ্ছে সেখানে দুর্ঘটনা হয়েছে। এর পর থেকে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। চিন্তা হচ্ছিল অনেক। পরে ছেলে নিজেই ফোন করে জানায় যে সুস্থ রয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)