আগে খাজনা শোধ করুন, না–হলে দুয়ারে সরকার পাবেন না, বনগাঁয় বেনজির ফতোয়া...
আজকাল | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সরকারি পরিষেবা গরিব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে দুয়ারে সরকার চালু করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের সেই প্রকল্পে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্চায়েত। বলা হয়েছে, পঞ্চায়েতের খাজনা পুরোপুরি শোধ না করলে দুয়ারে সরকারের কোনও সুবিধা দেওয়া হবে না। দুয়ারে সরকার শিবিরের পাশে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ রীতিমতো টেবিল পেতে খাজনা আদায় করছে। সেখান থেকে শংসাপত্র নিয়ে তবেই ঢুকতে হচ্ছে দুয়ারে সরকার শিবিরে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর গোপালনগরের ঘটনা। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় দুয়ারে সরকার শিবির চলছে। ওই শিবির থেকে বিধবাভাতা, বার্ধক্যভাতা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ও স্বাস্থ্যসাথী–সহ বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা প্রদানের প্রক্রিয়া চলছে। বুধবার বনগাঁর গোপালনগর এক নম্বর পঞ্চায়েতের হরিপদ ইনস্টিটিউশনে দুয়ারে সরকারের শিবির বসেছিল। সেখানে ব্লক অফিসের আধিকারিকরা বিভিন্ন পরিষেবার ফর্ম নিয়ে গিয়েছিলেন। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে শিবিরে প্রবেশপথে টেবিল পাতা হয়েছিল। সেখান থেকে সাধারণ মানুষকে জানিয়ে দেওয়া হয়, পঞ্চায়েতের সমস্ত খাজনা পরিশোধ না–করলে দুয়ারে সরকারে কোনও কিছুর আবেদন করা যাবে না। খাজনা আদায়ের টেবিল থেকে শংসাপত্র না–নিয়ে গেলে দুয়ারে সরকারের ফর্ম ফিলআপ করা যাবে না।
মনোয়ারা শেখ নামে এক প্রবীণ নাগরিক দুয়ারে সরকার শিবিরে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার বার্ধক্যভাতার অনুদান চালু হয়নি। আমি দুয়ারের সরকার শিবিরে এসেছিলাম। এখানে আসার পর আমাকে বলা হয়েছে, পঞ্চায়েতের খাজনা শোধ না করলে দুয়ারে সরকার শিবির থেকে কোনও ফর্ম ফিলআপ করা যাবে না।’ নজরুল ইসলাম মোল্লা নামে আরও এক প্রবীণ নাগরিক বার্ধক্যভাতার ফর্ম ফিলআপ করতে এসেছিলেন। তিনিও জানালেন, পঞ্চায়েতের খাজনা শোধ না করলে তাঁকে দুয়ারে সরকার শিবিরে ফর্ম ফিলআপ করতে দেওয়া হবে না বলে বলা হয়েছে।
গোপালনগর এক নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান মুক্তি হালদার বলেন, ‘অনেকে সময়মতো পঞ্চায়েতের খাজনা পরিশোধ করতে পারেননি। তাঁরাই বলেছিলেন। তাই, দুয়ারে সরকার শিবিরের পাশে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটা টেবিল পাতা হয়েছিল। সাধারণ মানুষ নিজেরাই সেখানে খাজনা পরিশোধ করছেন। কাউকে জোর করা হয়নি। আসলে বিরোধীরা দুয়ারে সরকার শিবিরের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন।’ বনগাঁ উত্তরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘দুয়ারে সরকার মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। সাধারণ মানুষ যাতে সহজে সরকারি সুবিধা পান, তার জন্য তিনি দুয়ারে সরকার চালু করেছেন। পঞ্চায়েত সেখানে খাজনার টেবিল বসাতে পারে না। খোঁজ নিয়ে দেখব। অভিযোগ সত্য হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’