• ক্রমশ দমবন্ধ নদীদের, সাইকেলে সচেতনতা প্রচার
    এই সময় | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: মরচে রংয়ের জলের প্রবাহ বয়ে যায় ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নদীটার বেশ কয়েক কিলোমিটার জুড়ে। ওটা সিঙ্গারন নদী। পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার কয়েকটা স্পঞ্জ আয়রন কারখানার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে ওই কারখানা থেকে বেরিয়ে আসা দূষিত জ‍লে এমন হাল ছোট নদীটার।

    বক্রেশ্বরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চন্দ্রভাগা নদী আর সাঁওতালডিহির কাছে গোয়াই নদীর পাড়ে কয়েক বছর আগেও গম চাষ করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এখন আর সে সব হয় না। নদী থেকে কিছুটা দূরেই জমে থাকে বিভিন্ন কারখানা থেকে বেরিয়ে আসা ছাইয়ের স্তূপ। হাওয়ায় উড়ে অথবা বৃষ্টিতে ধুয়ে ওই ছাই দ্রুত ছেয়ে ফেলে নদীর পাড়। তাই চাষ বন্ধ।

    আমতা ২ নম্বর ব্লকের অনেক দিনের প্রতিবেশী রামপুর খাল। ওই খালের পাড় জায়গায় জায়গায় এতটাই দখল হয়ে গিয়েছে যে, ঠিকমতো জল গলার উপায় নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, ফি বর্ষায় আমতার প্লাবিত হওয়ার অন্যতম বড় কারণ দখল হয়ে যাওয়া রামপুর খাল।

    কেমন আছে রাজ্যের নদীগুলো? গঙ্গা, দামোদর, রূপনারায়ণ, দ্বারকেশ্বরের মতো বড় নদী নয়, ওদের তুলনায় অনেক ছোট নদীর কথা হচ্ছে। যে নদীগুলো একটি জেলার কোন একটা ব্লকের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে। ছোট যে নদীর সঙ্গে বহু বছর ধরে তার তীরবর্তী জনপদের মানুষগুলোর আত্মীয়তার সম্পর্ক, সেই নদীগুলো কেমন আছে সেটাই সরেজমিন তদারক করতে ১২ দিন ধরে সাইকেল র‌্যালিতে বেরিয়েছিলেন দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি নদী ও পরিবেশরক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ১৫ জন স্বেচ্ছাসেবক। বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, হুগলি এবং হাওড়া হয়ে প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার পথ পার করে তাঁরা বুধবার কলকাতায় আসেন। শহরে এসে সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন নিজেদের অভিজ্ঞতা।

    সদ্য র‌্যালি শেষ করে ফেরা কল্লোল রায়, মৃণ্ময় সেনগুপ্ত, তাপস দাস এবং সঞ্জয় দাস জানান, দক্ষিণবঙ্গের নদীরা ভালো নেই। দেহের শিরা–উপশিরাগুলো যেমন বুজে গেলে রক্তসঞ্চালন বন্ধ হয়ে যায়, ঠিক তেমনই অবস্থা দক্ষিণবঙ্গের নদীগুলোরও। পাড় দখল, দেদার আবর্জনা ফেলা, নদীগর্ভ থেকে বালি ও পাথর লুট এমনকী নদীর পাড়ে নির্মাণ পর্যন্ত সব রকম ভাবে নদীর ক্ষতি করা চলছে। এরই ভয়াবহ পরিণতির কথা উল্লেখ করে বিভিন্ন জেলার সরকারি আধিকারিকদের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা। জানাচ্ছেন, প্রয়োজনে রাজ্য সেচ দপ্তরের সঙ্গেও কথা বলতে রাজি তাঁরা।

  • Link to this news (এই সময়)