• মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার ইউনিটের কাছেই জমছে বর্জ্য
    এই সময় | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • সুজিত রায়, আলিপুরদুয়ার

    কয়েক ফুট দূরেই মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার ইউনিট। পাশেই তৈরি হয়েছে ‍বর্জ্যের পাহাড়। অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে গোরু, কুকুর। নোংরা আটকে জমে রয়েছে নিকাশি নালার মুখ। সম্প্রতি জেলা সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি চেয়ে তাঁর কাছে সমাধানের আবেদন জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ার শহরের বাসিন্দারা। কী ভাবে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলছে মা ও শিশুদের ‘কেয়ার’, প্রশ্ন উঠেছে।

    আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ব্যাবহৃত সূচ, সিরিঞ্জ, এমনকী মৃত সদ্যোজাতেকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে সেখানে। ১৫ বছর ধরে আবর্জনা ফেলতে ফেলতে এখন তা পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলাকে সঙ্গে নিয়ে এই জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে হতচকিয়ে গিয়ছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। মোবাইল বের করে বর্জ্যের পাহাড়ের ছবিও তোলেন তিনি। সুপারের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু বর্জ্য অপসারণে কোনও প্রশাসনিক ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। কোথাও নাকি আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই, দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

    দুর্গন্ধ আর মশামাছির মধ্যেই রাত কাটাতে হয় শিশু ও প্রসূতিদের পরিবারকে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসনের কর্তারা সকলেই আসছেন, দেখছেন, নাকে রুমাল চাপা দিয়ে আবার হাসপাতাল থেকে চলেও যাচ্ছেন। প্রশ্ন শুনে কেউ আবার এড়িয়ে যাচ্ছেন। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। পুরসভা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য সমস্যার সমাধান হবে বলছেন। কিন্তু কেউই দিশা দেখাতে পারেননি। এ–ওর ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন। দু’পক্ষের বচসায় সমস্যায় সাধারণ মানুষ, শিশু ও মাতৃ ‍বিভাগের রোগীরা। তাঁদের আত্মীয়দের গলায় রীরিমতো শঙ্কা। বলছেন ‘কী করব? পরিবারের লোকজন ভর্তি রয়েছেন। তাই বাধ্য হয়েই হাসপাতালে থাকতে হয়। নাকে রুমাল বেঁধে রাত কাটাই। এ ছাড়া মশামাছির উপদ্রবে ভয় হয়। ফুড পয়জ়নিং, ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া না হয়ে যায়।’

    হাসপাতালের সুপার পরিতোষ মণ্ডলের কথায়, ‘আসলে জায়গার অভাব। হাসপাতালের এই বর্জ্য কোথায় নিয়ে যাব, পুরসভার কর্তারা কেউ সমাধানের রাস্তা দেখাতে পারেননি। ফলে কয়েক বছরে এখানের ছবিটা বদলাতে পারিনি।’ তাঁর সংযোজন, গত ১৫ বছরে পুরসভা–প্রশাসনের সঙ্গে এ নিয়ে শুধু বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমাধান অধরা। আর এইএই ১৫ বছরে অন্তত ছয় থেকে সাত বার হাসপাতাল সুপার বদল হয়েছেন। সবাই চেষ্টা করেছেন। আশ্বাস দিলেও আশা দেখাতে পারেনি।’ আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ কর বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা হয়েছে, জৈব–অজৈব ‍বর্জ্য আলাদা করতে। তা না করলে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।’

  • Link to this news (এই সময়)