• নবগ্রামে মহিলাকে কুপিয়ে খুনে গ্রেপ্তার প্রাক্তন স্বামী
    বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, লালবাগ: নবগ্রামে আদিবাসী প্রৌঢ়া খুনের ঘটনায় প্রাক্তন স্বামীকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম সুকল সোরেন। বাড়ি নবগ্রাম থানার দোরেরডাঙা। মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ি থেকে পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতকে বুধবার লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন। 


    প্রসঙ্গত, গত ১০ জানুয়ারি সকালে নবগ্রাম থানার রাইন্ডা গ্রামের খাবচিডাঙা মাঠ থেকে আদিবাসী প্রৌঢ়া অঞ্জলি টুডুর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে শ্বাসনালি ও হাতের শিরা কেটে খুন করা হয়। মৃতার পরিবার ওইদিন রাতে নবগ্রাম থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করে। মৃতার দাদা প্রশান্ত টুডু বলেন, কোদাল ও হাঁসুয়া শান দিতে কামারশালায় যাওয়ার জন্য ওইদিন বিকেলে চয়ননগরের বাড়ি থেকে বোন বের হয়েছিল। সন্ধ্যার পরেও বাড়ি না ফেরায় অনেক রাত পর্যন্ত আমরা  খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু, খোঁজ পাইনি। পরের দিন সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে খাবচিডাঙা মাঠে বোনের রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে সেখানে যাই। তবে দেরি হলেও পুলিস খুনিকে ধরেছে। বোনের খুনির ফাঁসির সাজার দাবি জানাচ্ছি। 


    নবগ্রাম থানার পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৩৫ বছর আগে চয়ননগর গ্রামের অঞ্জলি টুডুর সঙ্গে পাশের দোরেরডাঙা গ্রামের সুকল সোরেনের বিয়ে হয়। বিয়ের মাস তিনেকের মধ্যেই বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে তাঁরা আবার বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। কিন্তু, বছর ছয়েক আগে দ্বিতীয় স্বামী ও সন্তানদের ছেড়ে অঞ্জলিদেবী নবগ্রামের চয়ননগরে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। 


    গ্রামে ফিরে আসার কিছুদিন পর আবার প্রথম স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। দু’জনের মধ্যে ফোনে কথাবার্তার পাশাপাশি দেখাসাক্ষাৎ হতো। কিন্তু, অঞ্জলিদেবীর সঙ্গে অন্য কোনও পুরুষের সম্পর্ক রয়েছে বলে সুকল সন্দেহ করত। এই নিয়ে মাঝেমধ্যে দু’জনের মধ্যে অশান্তি হতো। ঘটনার দিন দুপুরে অভিযুক্ত ফোন করে ওই অঞ্জলিদেবীকে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক খাবচিডাঙা মাঠে ডাকে। সেইদিনও দু’জনের মধ্যে অশান্তি হয়। তখন সুকল সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া হাঁসুয়া দিয়ে অঞ্জলিদেবীর শ্বাসনালী ও হাতের শিরা কেটে খুন করে। 


    নবগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিস আধিকারিক বলেন, খুনের ঘটনায় কারও নামে অভিযোগ না থাকায় তদন্তে সমস্যা হচ্ছিল। যদিও মোবাইলের সূত্র ধরে প্রাক্তন স্বামীর নাম সন্দেহের তালিকায় ছিল। খুনের ঘটনার দু’দিন পর প্রাক্তন স্বামীকে থানায় ডেকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অবশেষে মঙ্গলবার খুনের কথা স্বীকার করে। খুনের ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কি না এবং ব্যবহৃত হাঁসুয়ার সন্ধান করতে ধৃতকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)