• বাঙ্কারে উদ্ধার দেড় কোটি টাকার কাশির সিরাপ কাঁটাতার টপকালেই সাত কোটি
    বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: কাঁটাতার পার করতে পারলেই মোটা মুনাফা। এক বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপের বোতল নির্ধারিত দামের পাঁচগুণ দামে বিক্রি হয় পদ্মাপারে। ভারতের বাজারে এক বোতল কাশির সিরাপের দাম ২২৪ টাকা। সেটাই চোরাইপথে বাংলাদেশ পাচার হলে তার দাম হয়ে যায় এক হাজার টাকা। অর্থাৎ, মুনাফা এক লাফে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সেই টাকার লোভেই নদীয়া সীমান্তে মাদকপাচারের রমরমা কারবার। উৎসবের মরশুম হোক কিংবা সাধারণ সময়— চাহিদায় কখনও লাগাম পড়ে না। সম্প্রতি বাঙ্কার উদ্ধারের ঘটনায় সীমান্তে ফের একবার মাদক পাচার চক্রের অতি সক্রিয়তার বিষয়টি সামনে এসেছে। উদ্বেগ বেড়েছে পুলিস থেকে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর। সম্প্রতি বাংলাদেশের অশান্তির কারণে অর্ডার না আসায় তা বাঙ্কারেই মজুত করতে থাকে অভিযুক্ত সুশান্ত ঘোষ ওরফে ‘লাল মহারাজ’। 


    গত সপ্তাহে শুক্রবার দুপুরে কৃষ্ণগঞ্জ থানার ভাজনঘাট এলাকায় চারটি বিশালাকার লোহার বাঙ্কার উদ্ধার হয়। তার ভিতরে থরে থরে সাজানো ছিল ৬২ হাজার ২০০টি নিষিদ্ধ কাশির সিরাপের বোতল। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত কাশির সিরাপের বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। যা পদ্মাপারে কমsপক্ষে ৭ কোটি টাকার মুনাফায় পাচার হতো বলে মনে করছে গোয়েন্দারা। তাই এই বিপুল পরিমাণ কাশির সিরাপ উদ্ধারকে নিজেদের বড় সাফল্য বলেই দাবি করছে বিএসএফ।  এই বাঙ্কারকাণ্ড ঘটনার তদন্তে রয়েছে এনসিবি। যদিও এখনও পর্যন্ত বাঙ্কার কাণ্ডে কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে একাধিক নাম জড়িয়ে রয়েছে বলেই দাবি গ্রামবাসীদের। দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্ত এলাকায় এই ব্যবসা করে আসছে সাধু মহারাজের গ্যাং। কয়েক মাস আগে ভীমপুর এর উদ্ধার হয় ২০ হাজার বোতল নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। সেই ঘটনায় ধৃত বাপন হালদার, রাজীব মন্ডলও বিশ্বস্ত শাগরেদ ছিল সাধু বাবাজির।  জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ ও হরিয়ানার সীমান্তের একটি সংস্থা এই কাশির সিরাপ তৈরি করে। সেই সুবাদে উত্তরপ্রদেশে থেকেই নদীয়া সীমান্তে কাশির সিরাপ পাচারের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন মহারাজ। মোচ্ছব আয়োজনের জন্য সময়মতো টাকাও পোঁছে যাচ্ছে শাগরেদদের কাছে। মদ, গাঁজা, সবকিছুই তাদের কাছে সহজলভ্য। সীমান্তের প্রত্যেক গ্রামেই ছোট বড়ো ১০-১৫ জন শাগরেদ রয়েছে মহারাজের। যারা কাশির সিরাপ এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় পাচারের কাজ করে আসছে বহু বছর ধরে।  বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগ আধিকারিক নীলোৎপাল পান্ডে বলেন, ‘বিএসএফ সীমান্তে সর্বদা সক্রিয় রয়েছে। সীমান্ত পাহারায় জাওয়ানরা গুরুত্ব সহকারে দায়িত্ব পালন করেন। যার জন্য এই সাফল্য এসেছে।’ এক গোয়েন্দার কথায়, উৎসবের মরশুমে কাশির সিরাপের চাহিদা বাড়লে দামও বেড়ে যায়। তখন ১০০ মিলি লিটার কাশির সিরাপের একটি বোতল ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা দামেও সীমান্তের ওপারে পাচার হয়। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)