• পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে ব্যর্থ ৫০টি পঞ্চায়েত
    বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচে শোচনীয় অবস্থা পুরুলিয়া জেলার ৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের। মোট প্রাপ্যের ৫০শতাংশ অর্থও খরচ করতে পারেনি ওইসব পঞ্চায়েত। যে কারণে রাজ্যের রিপোর্টেও পিছিয়ে থাকছে পুরুলিয়া জেলা। 


    জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন বছর শুরুর আগে ৩১ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের মোট প্রাপ্যের ৭০ শতাংশ টাকা এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৮০ শতাংশ টাকা খরচ করতে নির্দেশ দেয় রাজ্য। যদিও দেখা যায়, পুরুলিয়া জেলায় বহু পঞ্চায়েত এখনও ১০শতাংশ টাকাই খরচ করতে পারেনি। ঝালদা-২ ব্লকের চেকা পঞ্চায়েত অর্থ খরচে জেলার ১৭০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সব থেকে পিছিয়ে রয়েছে। মোট অর্থের মাত্র ৬ শতাংশ টাকা খরচ করতে পেরেছে এই পঞ্চায়েত। এখনও কয়েক কোটি টাকা পড়ে রয়েছে পঞ্চায়েতে। ওই ব্লকেরই টাটুয়ারা, ঝালদা-১ ব্লকের মারুমাসিনা, বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া, বান্দোয়ানের চিরুডি, বরাবাজারের টুমরাশোল, জয়পুরের উপর কাহান, রঘুনাথপুর-২ ব্লকের নতুনডি, আড়ষার পুয়াড়া, হেঁসলা পঞ্চায়েতের অবস্থাও শোচনীয়। 


    পঞ্চায়েতগুলি পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে কয়েক সপ্তাহ আগে একটি বৈঠকও হয়। সেখানে জেলা প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিক থেকে শুরু করে পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান, সচিবরাও ছিলেন। অর্থ খরচে কেন পিছিয়ে রয়েছে, তা জানতে চান আধিকারিকরা। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, অধিকাংশ পঞ্চায়েতেই কাজের ব্যাপারে মতানৈক্য দেখা দিচ্ছে। পঞ্চায়েতের সদস্যরা এক হতে পারছেন না। যদিও পঞ্চায়েতের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, ভাগ নিয়ে ঝামেলার কারণে যথা সময়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। টাকাও খরচ না হয়ে পড়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কোনও প্রকল্পের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার আগেই ঠিকাদারদের কমিশন দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। বহু ক্ষেত্রে কমিশনের অঙ্ক শুনলে ঠিকাদার পর্যন্ত চমকে যান। তার উপর একজনকে কমিশন দিলে অন্য পক্ষের লোকজন টাকা দাবি করে। তাদের খুশি না করলেই কাজে বাধা দেয়। ফলে থেমে থাকে কাজ। এইসব পঞ্চায়েতকে তো ‘যন্ত্রণার পঞ্চায়েত’ বলে আখ্যা দিয়েই দিয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকরা। পঞ্চায়েত দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, অর্থ খরচের নিরিখে পুরুলিয়া জেলার অবস্থান খুবই খারাপ। কিছু পঞ্চায়েত কাজ না করায় তার প্রভাব পড়ছে জেলার গড় খরচের উপর। আমরা সেইসব পঞ্চায়েতকে নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করছি। তাতে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির পরিবর্তনও হচ্ছে। আশা করছি, অর্থ খরচে রাজ্যের মধ্যে এবার কিছুটা উপরের দিকে যাবে পুরুলিয়া।
  • Link to this news (বর্তমান)