দাদুর ক্যান্সারের চিকিৎসায় সাহায্য চাওয়ার নামে চুরি
বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বর্ধমান: দাদুর ক্যান্সার হয়েছে বলে সাহায্য চেয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরছিল এক যুবক ও তার সঙ্গী। তারাই যে বাড়িতে চুরি করছে তা বুঝতে পারেনি কেউ। স্থানীয় বাসিন্দারা দু’জনকে ধরে আউশগ্রাম থানার পুলিসের হাতে তুলে দিয়েছে। ধরা পড়ার পর তারাই যে আউশগ্রাম ও তার আশপাশ এলাকায় হওয়া বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনায় জড়িত তা দু’জনে স্বীকার করেছে বলে পুলিসের দাবি। ধৃতদের নাম সাহিল বেদ। বছর ঊনিশের ওই যুবকের বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল দক্ষিণ থানা এলাকায়। বর্তমানে সে কাঁকসার পানাগড় ওভারব্রিজ মাঠ এলাকায় থাকে। তার সঙ্গী বছর আঠারোর যুবতী রিয়া বেদের বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের হীরাপুর থানা এলাকায়। সেও কাঁকসার পানাগড় ওভারব্রিজ মাঠ এলাকাতেই থাকে। মঙ্গলবার আউশগ্রাম থানার হরেকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা সুদেব মেটে ও যদুগড়িয়ার বাসিন্দা সুখী মুর্মু চোর সন্দেহে সাহিল ও রিয়াকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তল্লাশিতে দু’জনের কাছ থেকে চুরির কয়েকটি গয়না ও ২৪৫০ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিসের দাবি। ধৃতদের বুধবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করা হয়। তদন্তকারী অফিসার ধৃতদের টিআই প্যারেড করানোর জন্য আবেদন করেন। ধৃতদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন সিজেএম। টিআই প্যারেডের আবেদন মঞ্জুর করেছেন সিজেএম।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুদিন ধরেই আউশগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুপুরের দিকে চুরি হচ্ছে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে পালাচ্ছে চোরে। গত ২৭জানুয়ারি আউশগ্রাম থানার হরেকৃষ্ণপল্লির সূর্যকান্ত মেটের বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন সকাল ৯টা নাগাদ সূর্যকান্ত বননবগ্রাম বাজারে গিয়েছিলেন। তাঁর স্ত্রী সীমা মেটে খেতমজুরের কাজ করতে গিয়েছিলেন। দুপুর ১টা নাগাদ সূর্যকান্ত বাড়ি ফিরে এসে দেখেন, এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়িতে চুরি হয়েছে। বিকেল ৪টে নাগাদ তাঁর স্ত্রী জমি থেকে বাড়ি ফেরেন। এসে তিনি দেখেন, ঘর থেকে গয়না চুরি হয়েছে। ওইদিন এরকম একাধিক বাড়িতে চুরি হয়। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। চুরির রহস্যের কিনারা হয় সূর্যকান্তর মেয়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পর। বাড়ি ফিরে তার এবং এলাকার কয়েকটি বাড়িতে চুরির কথা জানতে পেরে পরিবারের লোকজনকে ছাত্রী জানায়, সে যখন স্কুলে যাচ্ছিল তখন একটি ছেলে ও মেয়ে তাদের বাড়িতে আসে। দাদুর ক্যান্সার হয়েছে বলে তারা সাহায্য চায়। বাড়িতে কেউ না থাকার কথা বলে সুপর্ণা এরপর স্কুলে চলে যায়। তারাই সম্ভবত চুরি করেছে বলে সন্দেহ হয় সূর্যকান্তর। অভিযুক্তদের ধরার পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস জেনেছে, সাহায্য চাওয়ার নাম করে তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াত। সেই সময় তারা কোন বাড়িতে লোক নেই তা জেনে নিত। এরপরই অপারেশন সারত তারা।