সংবাদদাতা, কান্দি: সরকারি বালি খাদানে গাড়ি যাতায়াতের কারণে বাসিন্দাদের তৈরি করা নদীর বুকের অস্থায়ী রাস্তা নষ্ট হয়েছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন বড়ঞা ব্লকের প্রায় ২০টি গ্রামের বাসিন্দারা। ময়ূরাক্ষী নদীর সর্বশ্রীঘাটের ওই রাস্তা নষ্ট হওয়ায় কার্যত যাতায়াত বন্ধ। টোটো থেকে বাইক পারাপারেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। দুই পাড়ের অধিকাংশ বাসিন্দা ঘুরপথ ব্যবহার করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়ূরাক্ষী নদীর সর্বশ্রীঘাটের পূর্বে ব্যবসাক্ষেত্র বর্ধিষ্ণু পাঁচথুপি গ্রাম। আর নদীর অপরদিকে মালিয়ান্দি, গড্ডা, বৈদ্যনাথপুর ইত্যাদি প্রায় ২০টি গ্রাম রয়েছে। এছাড়াও পাঁচথুপি গ্রামে একাধিক স্কুল কলেজ থেকে প্রশাসনিক অফিসও রয়েছে। তাই ময়ূরাক্ষীর অপরপাড়ের বাসিন্দাদের নির্ভরযোগ্য গ্রামের নাম পাঁচথুপি। যদিও একদশক আগে অপরপাড়ের গ্রামের বাসিন্দাদের পাঁচথুপি আসতে গেলে প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে আসতে হতো। কিন্তু কয়েক বছর আগে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে পাঁচথুপি বাসস্ট্যান্ড থেকে নদী ঘাট পর্যন্ত একটি ঢালাই রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল। ঘাটের অপরপাড়েও রয়েছে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে ময়ূরাক্ষী নদীর বুকেই অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সেই অস্থায়ী রাস্তার উপর দিয়েই একমাস আগেও ভালোভাবে চলাচল করত টোটো বাইক থেকে ছোট গাড়িও। কিন্তু এখন সেই রাস্তা খানাখন্দে ভর্তি হওয়ায় চলাচল কার্যত বন্ধ।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, একমাস হল সর্বশ্রীঘাটের কাছে সরকারি বালি খাদান থেকে বালি তোলা শুরু হয়েছে। সেই কারণে অস্থায়ী রাস্তার উপর দিয়ে চলাচল করছে ট্রাক্টর থেকে ডাম্পার। আর ভারী যান চলাচলের কারণে রাস্তা ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। রাস্তার ইট-পাথর উঠে গিয়ে বালি বেরিয়ে গিয়েছে। এর ফলে বাইক, টোটো থেকে ছোট গাড়িও যাতায়াত করতে পারছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মুকুলেশ দত্ত, হায়দার আলি প্রমুখ জানান, ঘাটের এই জায়গায় একটি কজওয়ে তৈরির জন্য বহু বছর ধরে আমরা দাবি করে আসছি। কয়েক বছর আগে গ্রামের মানুষ নদীর বুকে অস্থায়ী রাস্তা বানিয়েছিলেন। তাতে বর্ষাবাদে বাকি সময় চরম উপকার হয়েছে। কিন্তু বালিঘাট চালু হওয়ার পর থেকেই রাস্তা ভাঙতে শুরু করেছে। এখন এর উপর দিয়ে হাঁটা ছাড়া অন্য উপায় নেই। পঞ্চায়েতকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। যদিও স্থানীয় পাঁচথুপি পঞ্চায়েত প্রধান কেশব সাহা বলেন, এমন ঘটনার কথা আমার জানা নেই। তাছাড়া পঞ্চায়েত থেকে এই সমস্যা মেটানোও সম্ভব নয়।
স্থানীয় মালিয়ান্দি গ্রামের বাসিন্দা তথা প্রাক্তন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস বলেন, ময়ূরাক্ষী নদীর বুকে কজওয়ে সহ রাস্তা তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত করতে পারিনি সেচদপ্তরের অনুমতি না মেলায়। তবে অস্থায়ী রাস্তা ভেঙে পড়ার কারণে বাসিন্দাদের প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরপথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। সমস্যায় পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। এবিষয়ে বড়ঞা ব্লকের এক আধিকারিক বলেন, ঊর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে।