• মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই, তিন হোমকন্যার জন্য জমির খোঁজ
    বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: দু’জনের বয়স আঠারো পেরিয়েছে। ফলে হোমে থাকতে পারছেন না। আবার বাইরেও মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই। আরও একজনের বয়স আঠারো ছুঁইছুঁই। ফলে তাকেও কিছুদিন পর ছাড়তে হবে হোম। কিন্তু তারপর...? জলপাইগুড়িতে ওই তিন হোমকন্যার ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁদের মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করে দিতে উদ্যোগী হল খোদ হোম কর্তৃপক্ষ। আবাস যোজনায় বাড়ি পেতে দরকার অন্তত একফালি জমি। ফলে ওই জমি কিনতে অর্থ সংগ্রহে নেমেছে শহরের ‘অনুভব’ হোম কর্তৃপক্ষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদনের পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন মানুষের কাছে ওই হোম ও জলপাইগুড়ি মহিলা কল্যাণ সঙ্ঘের তরফে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।


    বুধবার অনুভব হোমের তরফে দীপশ্রী রায় বলেন, আমাদের হোমে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে কোনও মেয়েকে রাখার নিয়ম নেই। কিন্তু ওই তিনটি মেয়ের যেহেতু বাইরে কোথাও মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই, সেকারণে তাঁদের মাথার উপর ছাদ তৈরি করে দিতে উদ্যোগী হয়েছি আমরা। প্রত্যেকের কাছেই আবেদন করা হচ্ছে। যদি কোনওভাবে একটু জমির ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে সরকারি প্রকল্পে সেখানে ওই মেয়েদের জন্য হয়তো বাড়ি তৈরি দেওয়া সম্ভব হবে।


    হোম সূত্রে খবর, সহায় সম্বলহীন যে তিনটি মেয়ের মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাঁদের একজন কলকাতায় এমবিএ পড়ছেন। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি পড়াশোনা করছেন, হোম কর্তৃপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে ওই প্রতিষ্ঠান তাঁর পড়ার খরচ মকুব করেছে। হোম কর্তৃপক্ষের তরফে ওই তরুণীর কলকাতায় থাকা-খাওয়ার খরচ জোগানো হচ্ছে। প্রায় ১৫ বছর জলপাইগুড়ির অনুভব হোমে ছিলেন তিনি। তাঁর বোনও ওই হোমে রয়েছে। সে এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। হোমের খরচেই ওডিশি নৃত্য শিখছে সে। আঠারো বছর হয়ে যাওয়ায় দিদিকে হোম ছাড়তে হয়েছে। কিছুদিন পর বোনের আঠারো পেরবে। ফলে তাকেও হোম ছাড়তে হবে। পরিবার, বাড়িঘর বলতে কিছুই নেই তাঁদের। মায়ের ঠিকানা বলতে সংশোধনাগার। ফলে সম্বলহীন ওই কৃতী  মেয়েদের মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দিতে উদ্যোগী হয়েছে হোম কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মতো আঠারো পেরনো আরও এক সম্বলহীন হোমকন্যা রয়েছেন। তাঁদের জন্য হোম কর্তৃপক্ষের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন শহরবাসী।
  • Link to this news (বর্তমান)