নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: যথাযথ ব্যবস্থাপনা, দিনরাত নজরদারি, সুরক্ষা বলয়—এই পরিকাঠামোয় ভর করে এবছর গঙ্গাসাগর মেলার বিপুল ভিড় সাফল্যের সঙ্গে সামলেছে রাজ্য সরকার। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনকে কুর্নিশ জানিয়েছেন পুণ্যার্থীরা। বুধবার পূর্ণকুম্ভে যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাতে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনের পরিকল্পনায় ব্যাপক ঘাটতি চিহ্নিত হয়েছে। এই বিষয়টি তুলে ধরে বিজেপি শাসিত রাজ্যকে নিশানা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ঘটনার খবর আসতেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। বাংলার কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন কি না, খোঁজখবর শুরু করে দেন। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ সহ প্রশাসনের একাধিক আধিকারিককে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেন তিনি। সামাজিক মাধ্যমে মমতা লিখেছেন, ‘কুম্ভে পদপিষ্ট হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। কমপক্ষে ১৫ জন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মৃত পুণ্যার্থীদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। মৃতদের আত্মার শান্তিকামনা করছি।’ এরপরই বাংলায় নির্বিঘ্নে গঙ্গসাগর মেলা সম্পন্ন হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আনেন মমতা। তিনি লিখেছেন, ‘গঙ্গাসাগর মেলা থেকে আমি শিক্ষা নিয়েছি, যেখানে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম হয়, সেখানে পুণ্যার্থীদের জন্য পরিকল্পনা এবং পরিষেবা সর্বোচ্চ পর্যায়ের হতেই হবে।’
এ বছর গঙ্গাসাগর মেলায় এক কোটির বেশি মানুষের সমাগম হয়েছিল। গঙ্গাসাগরের আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে জলপথ ব্যবহার করতেই হয়। সেই মতো যাবতীয় সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়ে মেলার সুরক্ষা সহ যাবতীয় প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন। রাজ্যের ১২ জন মন্ত্রীকে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে পুলিস ও বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দিষ্ট নির্দেশ পাঠিয়ে গিয়েছেন। মেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তো বটেই, এমনকী পুণ্যার্থীদের বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত নজরদারি জারি ছিল তাঁর। কিন্তু কুম্ভে এবার রেকর্ড ভিড় হতে পারে জানা সত্ত্বেও কেন প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। নিহত ও জখমদের মধ্যে বাংলার কেউ আছেন কি না, জানতে এদিন নবান্ন থেকে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা হয়। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। শেষমেষ দিল্লিতে রেসিডেন্ট কমিশনারের অফিসকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়। ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পরও মৃত ও আহতদের তালিকা উত্তরপ্রদেশ সরকার না জানানোয় উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকে। ওই তালিকা হাতে পেতে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে যোগাযোগ রেখে চলেছে রেসিডেন্ট কমিশনারের অফিস।