• ভিড় নিয়ন্ত্রণের কৌশল বাংলার পুলিসের থেকে শেখা উচিত উত্তরপ্রদেশ সরকারের
    বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
  • পুরুষোত্তম তিওয়ারি, প্রয়াগরাজ: মৌনী অমাবস্যায় পূর্ণকুম্ভে ডুব দিয়ে মোক্ষ লাভের আশা অপূর্ণই রয়ে গেল। মঙ্গলবার তখন রাত দু’টো। আমি কলকাতার বড়বাজার সৎসঙ্গ ভবন থেকে আসা একদল সাধু-সন্তদের সঙ্গে  পবিত্র স্নান করতে রওনা দিয়েছিলাম। সঙ্গমস্থল থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে আমাদের সবাইকে থামানো হয়ে। বলা হয়েছিল যে, সামনে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর এগোনো সম্ভব নয়। আমাদের সবাইকে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হয়। ভাগ্য ভালো ছিল যে, আমরা একটি বিশেষ পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম। অন্যথায় ফিরে আসা সম্ভব হত না। সাধারণ মানুষ যেখানেই থাকুক না কেন, আটকে পড়ে। 


    মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে আমি গঙ্গাসাগরে স্নান সেরে কপিলমুনি মন্দিরে প্রার্থনা করেছি। একদি঩নে ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ মানুষ সেখানে স্নান করে সেখানে। কোনও সমস্যা হয় না। কিন্তু প্রয়াগরাজে ভিড় সামলাতে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তাদের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছ থেকে ভিড় নিয়ন্ত্রণের প্রশিক্ষণ নেওয়া উচিত। গঙ্গাসাগর মেলা ও দুর্গাপূজার সময় পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে বিশাল জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করে প্রতি বছর।  অথচ প্রয়াগরাজে পুলিশ ভিআইপিদের যাতায়াত ও তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করতেই বেশি ব্যস্ত বলে মনে হচ্ছে। 


    রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে প্রয়াগরাজ তীর্থস্থান কমপ্লেক্স। সর্বত্রই পুলিশ ব্যবস্থা তথৈবচ। মঙ্গলবার ভক্তদের বিশাল উপচে পড়েছিল।  পুণ্যার্থীরা তাঁদের সমস্ত কষ্ট ভুলে বিশ্বাসের ডুব দিতে সাগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু  মৌনী অমাবস্যায় পদপিষ্টের মতো ঘটনা তাঁদের সেই আগ্রহে জল ঢেলে দেয়। রাত দেড়টা নাগাদ প্রয়াগরাজে ভিড়ে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। তারমধ্যে ধাক্কাধাক্কি। এজন্য শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিল। রাস্তাঘাট ছিল বন্ধ। কোনওভাবে ওই রাতে পূণ্যার্থীরা নদীর তীরে পৌঁছেছিল। কিন্তু তাদের আটকানো হয়।  পরে জানা যায়, ওপারে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। পূর্ণকুম্ভে এখনও প্রচুর ভিড়। সবাই যেখানেই থাকুক না কেন আটকে রয়েছে। বিশৃঙ্খলা চরমে। এখান থেকে বের হওয়া খুব কঠিন।
  • Link to this news (বর্তমান)