সরকারের হস্তক্ষেপে নতুন নিয়ম চালু, লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা
বর্তমান | ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এক গুছিতে ৫০টি এবং তার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ২০টি পান এখন থেকে বিক্রি করতে পারবেন চাষিরা। সরকারের বেঁধে দেওয়া এই নিয়মের পর অবশেষে লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন লক্ষ লক্ষ পান চাষি। ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই নয়া নিয়ম চালু হয়েছে। তার আগে আড়তদারদের চাপে অনেক বেশি পান একটি গুছিতে বিক্রি করতে বাধ্য হতেন চাষিরা। যার ফলে নিয়মিত লোকসান হতো। কিন্তু গত এক মাস চাষিদের থেকে সেভাবে আর কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। পান বিক্রি করে এখন লাভের টাকা ঘরে তুলছেন তাঁরা। অন্যদিকে এবার লন্ডনে যাচ্ছে বাংলার মিঠে পাতার পান। এতদিন ইউরোপের কয়েকটি দেশে এবং দুবাই ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেত। এবারে ব্রিটিশদের মধ্যেও পানের চাহিদা তৈরি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার কাকদ্বীপে পান চাষিদের নিয়ে রিভিউ মিটিং করেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না। সেখানে ফের সরকারি নিয়ম মানার ব্যাপারে আড়তদারদের সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি আবার বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন। নয়া নিয়ম লাগু করার আগে পর্যন্ত একটি পান এক টাকারও কম দামে বিক্রি করতে হতো চাষিদের। বিপুল লোকসান হতো বলে সরকারের কাছে সুরাহার দাবি জানিয়েছিল পান চাষিদের সংগঠনগুলি। তাতে সাড়া দিয়ে গত বছর অক্টোবর মাসে কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না বৈঠক করে এক গুছিতে সর্বাধিক ৭০টি পান দেওয়ার নিয়ম বেধে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তা কার্যকর হতেই একটি পানপাতার দাম দু’টাকা পর্যন্ত উঠছে। কিছুদিন আগে কাকদ্বীপ বাজারে এক কৃষক আট হাজার পান বিক্রি করে আড়াই লক্ষ টাকা আয় করেছেন। আগের পরিস্থিতি হলে তাঁকে এই টাকা রোজগার করতে ২৪ থেকে ৩০ হাজার পান বিক্রি করতে হতো। পান ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুরজিৎ পট্টনায়ক বলেন, ‘গত এক মাস ধরে বাজারে কৃষকদের মধ্যে উৎসাহ বেড়েছে। চাষ করে তাঁরা এখন সঠিক দাম পাচ্ছেন। এই মিঠে পাতা বাংলা ছাড়া কোথাও চাষ হয় না। বিদেশে রপ্তানিও হচ্ছে অনেক বেশি। সেই তালিকায় এবার লন্ডন যোগ হল।’ জানা গিয়েছে, জেলা থেকে আড়তদার মারফত পূর্ব মেদিনীপুরের মার্কেটে যাচ্ছে পান। সেখান থেকে বড় মাপের রপ্তানি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা কিনে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করছেন।